লখনউ, ১৪ মে : উত্তর প্রদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক উপহার ঘোষণা করল মোদি সরকার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা নয়ডার যমুনা অথরিটি অঞ্চলে (YEIDA) একটি সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে। এই প্রকল্পে মোট ৩৭০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ হবে, যা রাজ্যের গ্রেটার নয়ডার নিকটবর্তী জেবরে বাস্তবায়িত হবে। এই ইউনিটে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, গাড়ি এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসের জন্য ডিসপ্লে ড্রাইভার চিপ উৎপাদন করা হবে।
এই ঘোষণার পর মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এক্স-এ পোস্ট করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি লেখেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আজকের এই সিদ্ধান্ত আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্যে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। ৩৭০০ কোটি টাকার বিনিয়োগে গড়ে ওঠা এই সেমিকন্ডাক্টর ইউনিট উত্তর প্রদেশকে উন্নত ইলেকট্রনিক্স ও সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনের একটি প্রধান কেন্দ্রে রূপান্তর করবে।”
এই সেমিকন্ডাক্টর প্রকল্প নয়ডাকে ইলেকট্রনিক্স এবং চিপ উৎপাদনের একটি প্রধান কেন্দ্র করে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর ফলে একদিকে যেমন ভারতের প্রযুক্তি খাতে আত্মনির্ভরতা বাড়বে, তেমনই অন্যদিকে রাজ্যের হাজার হাজার যুবক-যুবতীর জন্য কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ তৈরি হবে।
যমুনা অথরিটি এলাকা ইতিমধ্যেই একাধিক শিল্প প্রকল্পের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এবার এই সেমিকন্ডাক্টর ইউনিটের সংযোজন এই অঞ্চলের প্রযুক্তিগত উন্নয়নকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। একইসঙ্গে, রাজ্যে শিল্প বিনিয়োগ আরও উৎসাহ পাবে বলে আশা করছে প্রশাসন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ভারত এখনো পর্যন্ত প্রায় সম্পূর্ণভাবে সেমিকন্ডাক্টর চিপ আমদানির ওপর নির্ভরশীল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত ১.৭১ লক্ষ কোটি টাকার সেমিকন্ডাক্টর চিপ আমদানি করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১৮.৫% বেশি। এতে মোট ১৮.৪৩ বিলিয়ন চিপ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
২০২২-২৩ সালে ভারতের চিপ আমদানির পরিমাণ ছিল ১৪.৬৪ বিলিয়ন, যার বাজারমূল্য ছিল ১.২৯৭ লক্ষ কোটি টাকা। এই হিসেবে, ২০২৩ সালে ভারত প্রায় ৬.৭৩ বিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৫৬,০০০ কোটি টাকা) সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস আমদানি করেছে, যা দেশটিকে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম চিপ আমদানিকারক করেছে।
ভারত বর্তমানে চিপ আমদানির জন্য সবচেয়ে বেশি নির্ভর করে চীনের ওপর। তবে নয়ডায় এই নতুন ইউনিট স্থাপনের মধ্য দিয়ে ভারত সেমিকন্ডাক্টর ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।

