ভারতীয় বংশোদ্ভূত অনিতা আনন্দ হলেন কানাডার নতুন বিদেশমন্ত্রী, ভাগবত গীতা হাতে নিয়ে শপথ গ্রহণ

ওটাওয়া, ১৪ মে: কানাডায় বড়সড় রাজনৈতিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি তাঁর মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল করেছেন। এই রদবদলের অংশ হিসেবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত অনিতা আনন্দকে দেশের নতুন বিদেশমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি মেলানি জোলির স্থলাভিষিক্ত হলেন, যাঁকে এখন শিল্পমন্ত্রী করা হয়েছে।
৫৮ বছর বয়সী অনিতা আনন্দ কানাডার লিবারেল পার্টির জ্যেষ্ঠ সদস্য। শপথগ্রহণের সময় তিনি হিন্দু ধর্মগ্রন্থ ‘ভাগবত গীতা’ হাতে রেখে শপথ গ্রহণ করেন, যা তাঁর জন্য একটি ব্যক্তিগত ঐতিহ্য হয়ে উঠেছে। আগের মন্ত্রিসভা দায়িত্ব নেওয়ার সময়ও তিনি একই রীতি অনুসরণ করেছিলেন।
শপথগ্রহণের পর এক্স-এ অনিতা লেখেন, “কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া আমার জন্য একটি সম্মানের বিষয়। একটি নিরাপদ ও ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব গড়ে তোলার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি ও আমাদের টিমের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছি।”
অনিতা আনন্দ এইবারের (২০২৫ সালের) ফেডারেল নির্বাচনে ওকভিল ইস্ট থেকে বিজয়ী হয়েছেন। এর আগে তিনি ২০১৯ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত হাউস অফ কমন্সে ওকভিল রাইডিংয়ের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তিনি পাবলিক সার্ভিস অ্যান্ড প্রোকিওরমেন্ট, ন্যাশনাল ডিফেন্স, ট্রান্সপোর্ট, অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য এবং ট্রেজারি বোর্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি জন্মগ্রহণ করেন ২০ মে, ১৯৬৭ সালে, নোভা স্কোটিয়ার কেন্টভিল শহরে। তাঁর বাবা-মা ভারতের অভিবাসী—মা পাঞ্জাবের এবং বাবা তামিলনাড়ুর। বাবা-মা ১৯৬০-এর দশকের শুরুতে কানাডায় চলে আসেন। অনিতা তিন বোনের মধ্যে একজন—গীতা এবং সোনিয়া তাঁর দুই বোন।
১৯৮৫ সালে তিনি অন্টারিওতে চলে যান এবং সেখানে পলিটিকাল সায়েন্সে একাডেমিক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে আইন শাস্ত্রে ব্যাচেলর অফ আর্টস (অনার্স), ডালহৌজি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি এবং টরন্টো ইউনিভার্সিটি থেকে এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন।
পেশাগত জীবনে তিনি আইনজীবী, শিক্ষক এবং সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে সফল ক্যারিয়ার গড়ে তোলেন। ১৯৯৫ সালে তিনি ক্যানাডিয়ান আইনজীবী ও ব্যবসায়িক নির্বাহী জন নল্টনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের চার সন্তান রয়েছে এবং পরিবারসহ তাঁরা ওকভিলে বসবাস করেন।
২০১৯ সালে তিনি ফেডারেল মন্ত্রিসভায় যুক্ত হওয়া প্রথম হিন্দু সদস্য হন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে তাঁর কঠোর পরিশ্রম ও দক্ষ নেতৃত্বের জন্য প্রশংসিত হন। এখন বিদেশমন্ত্রী হিসেবে তাঁর নতুন ভূমিকা বিশ্বমঞ্চে কানাডার প্রতিনিধিত্বকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
_______