বায়োলাম্পিভ্যাক্সিন: গবাদি পশুর ‘লাম্পি স্কিন ডিজিজ’ এর বিরুদ্ধে নতুন টিকা আনল ভারত বায়োটেক

হায়দরাবাদ, ১৪ মে: ভারত বায়োটেকের গ্রুপ সংস্থা বায়োভেট গবাদি পশুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ (LSD)-এর বিরুদ্ধে বিশ্বের প্রথম ডিআইভিএ মার্কার টিকা বায়োলাম্পিভ্যাক্সিন (Biolumpivaxin) বাজারে আনল। বুধবার অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন. চন্দ্রবাবু নাইডুর উপস্থিতিতে এই টিকার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়।
লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভারতে ২০১৯ ও ২০২২ সালে দুটি বড় আকারে মহামারীর রূপ নেয়। প্রাণিসম্পদ ও দুগ্ধ মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, এই দুটি প্রাদুর্ভাবে প্রায় ২ লক্ষ গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে এবং কোটি কোটি পশু দুধ উৎপাদনের ক্ষমতা হারিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী নাইডু বলেন, “গবাদি পশু খাতে ২০% প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং দুগ্ধ শিল্পের দীর্ঘমেয়াদী টেকসইতা নিশ্চিত করতে এই টিকার কার্যকর রোলআউট জরুরি।” এই বছর ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সিডিএসসিও এই টিকার বাজারজাতকরণের অনুমোদন দেয়।
বায়োলাম্পিভ্যাক্সিন একটি লাইভ-অ্যাটেনুয়েটেড মার্কার টিকা, যা আইসিএআর-এনআরসিই, হিসার এবং বায়োভেটের যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে। এটি এলএসডি ভাইরাস/রাঁচি/২০১৯ স্ট্রেন ব্যবহার করে প্রস্তুত হয়েছে। এই টিকার বিশেষত্ব হলো, এটি ডিআইভিএ (টিকাপ্রাপ্ত প্রাণী থেকে সংক্রামিতদের আলাদা করা)প্রযুক্তি-ভিত্তিক, যার মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবে সংক্রমিত পশু ও টিকাপ্রাপ্ত পশুর মধ্যে পার্থক্য করা সম্ভব। ফলে রোগ পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ আরও কার্যকর হবে। এই টিকাটি গরু ও মহিষকে বছরে একবার মাত্র দেওয়া প্রয়োজন। এটি ২৫ ডোজ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০০ ডোজের মাল্টিডোজ ভায়ালে পাওয়া যাবে এবং ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সংরক্ষণযোগ্য।
বায়োভেট জানিয়েছে, তাদের বেঙ্গালুরুর উৎপাদন কেন্দ্রে বছরে ৫০ কোটি ডোজ তৈরি করা সম্ভব, যা দেশের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট। বায়োভেটের প্রতিষ্ঠাতা ও ভারত বায়োটেকের এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান কৃষ্ণা এল্লা বলেন, “মানব সম্পদের পাশাপাশি পশুসম্পদও জাতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এই খাতকে রক্ষা করাই আমাদের দায়িত্ব। এতে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ গঠনের লক্ষ্যও বাস্তবায়িত হবে।”