মায়ের বিয়ের ২৫ দিনের মাথায় ছেলের রহস্যমৃত্যু, সৎ ছেলের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ দিলীপ ঘোষের পরিবার

কলকাতা, ১৩ মে : চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাক্ষী হল নিউটাউন। বিজেপি নেতা তথা দলের জাতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারের একমাত্র পুত্র সৃঞ্জয় দাশগুপ্তের (ওরফে প্রীতম) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার নিউটাউনের শাপুরজি আবাসনে নিজ ফ্ল্যাট থেকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ২৫ বছর বয়সী ওই আইটি কর্মীকে। বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

সৃঞ্জয় সল্টলেকের একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন। তিনি রিঙ্কুর প্রথম পক্ষের সন্তান। পারিবারিক সূত্রে খবর, পুলিশ ইতিমধ্যেই দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। আজই আর.জি. কর মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্ত হতে পারে। তদন্তকারী আধিকারিকরা প্রাথমিকভাবে কিছু জানাতে চাননি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত তারা অপেক্ষা করতে চান।

ঘটনাকে ঘিরে জল্পনা বেড়েছে। কারণ মাত্র ২৫ দিন আগেই অর্থাৎ ১৮ এপ্রিল রিঙ্কু মজুমদার ও দিলীপ ঘোষের বিয়ে হয়েছিল। সেই সময় সৃঞ্জয় শহরে ছিলেন না। বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন। তবে সৃঞ্জয় বলেছিলেন, “১৩ বছর ধরে মা সামাজিক ও পারিবারিক দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। এখন নিজের জীবন শুরু করছেন, আমি খুব খুশি মায়ের জন্য।”

তিনি আরও বলেছিলেন, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর একাধিকবার দেখা এবং কথা হয়েছে। তিনি তাঁকে একজন পিতৃতুল্য ব্যক্তি হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর কথায়, “মানুষের মধ্যে একটা ‘ইমোশনাল ভ্যাকুয়াম’ থেকে যায়। সেই শূন্যতা পূরণ হওয়ার অনুভূতি ভালো।”

সৃঞ্জয়ের আকস্মিক মৃত্যু এই আবেগঘন সম্পর্ককে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। কীভাবে মৃত্যু হল, কী ঘটেছিল ওই ফ্ল্যাটে—তা জানতে মরিয়া পুলিশ। এখনও পর্যন্ত সৃঞ্জয়ের মৃত্যু নিয়ে দিলীপ ঘোষ বা রিঙ্কু মজুমদারের পক্ষ থেকে কোনও বিবৃতি প্রকাশ্যে আসেনি। মঙ্গলবার দুপুরে আর.জি. কর মেডিক্যালে পৌঁছেছিলেন সৃঞ্জয়ের পিতা ও রিঙ্কুর প্রাক্তন স্বামী রাজা দাশগুপ্ত। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে তিনি কোনও কথা বলেননি।

পরিণত মানসিকতার ছাপ রেখে মায়ের নতুন জীবনের প্রতি যে ছেলেটি সম্মান জানিয়েছিল, তার এভাবে রহস্যজনকভাবে মৃত্যুর ঘটনা ঘিরে উঠছে নানা প্রশ্ন। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখা হবে।