ভারত থামবে না, আঘাত করলে ধ্বংস করে দেবে, রাজনাথ সিংয়ের কড়া বার্তা

নয়াদিল্লি, ১৩ মে : ভারত এখন আর থামবে না। আঘাত করলে ধ্বংস করে দেবে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং মঙ্গলবার রাজধানীতে একটি উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠকে এই সুরেই কড়া বার্তা দিয়েছেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দিনেশ কে ত্রিপাঠী এবং প্রতিরক্ষা সচিব গিরিধার আরামানে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সোমবার রাতের জাতির উদ্দেশে জোরালো ভাষণের মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রতিরক্ষা কৌশলে একটি স্পষ্ট মোড় নেওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে—ভারত আর শুধু প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে না, বরং একটি নতুন নীতির রূপরেখা তৈরি করছে। লাগাতার পাল্টা আঘাত।

সূত্রের খবর, বৈঠকে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর অগ্রগতি ছিল আলোচনার কেন্দ্রে। গত ৭ মে শুরু হওয়া এই ত্রিবাহিনী অভিযান ইতিমধ্যেই পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের ভেতরে একাধিক সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। ২২ এপ্রিল পহেলগামে ঘটে যাওয়া নৃশংস হামলায় ২৬ জন নিরীহ নাগরিক নিহত হওয়ার পর এই অভিযান শুরু হয়।

এই জরুরি বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ, ভারতের প্রতিরোধ শক্তিকে আরও শাণিত করা, গোয়েন্দা নজরদারি আরও জোরদার এবং প্রতিক্রিয়া আরও দ্রুততর করা।

ভারতের প্রতিরক্ষা কৌশল এখন প্রতিরক্ষামূলক থেকে রণকৌশলগত আগ্রাসনের পথে এগিয়েছে। এখন সেনাবাহিনী শুধু সীমান্ত রক্ষা করছে না, বরং আধিপত্য ও প্রতিরোধের মাধ্যমে সেগুলিকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করছে। রাজনাথ সিংয়ের এই ওয়ার-রুম স্টাইলের তদারকি সেই রণনীতির অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। সকল বাহিনীর মধ্যে সুসংহত সমন্বয় বজায় রেখে ভবিষ্যতের যেকোনো পরিস্থিতির মোকাবিলা নিশ্চিত করা এখন মূল লক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী মোদী সোমবার সন্ধ্যায় ভাষণে বলেছিলেন, “যে সিঁদুর আমাদের কন্যাদের কপাল থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে, তারা এখন তার মূল্য বুঝছে।” এই বার্তা শুধুই আবেগ নয়, এটি ভারতের প্রতিরক্ষা নীতির নতুন রূপরেখা।

‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দিক ছিল নির্ভুল আঘাত, স্থল, জল ও আকাশপথে একযোগে অভিযান। এতে পাকিস্তানের ১১টি কৌশলগত এয়ার বেসে হামলা চালানো হয়েছে এবং ১০০-র বেশি জঙ্গিকে নিকেশ করা হয়েছে। তবে এই অভিযান ছিল অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত। বৃহৎ সামরিক ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেও সাধারণ নাগরিকদের ক্ষয়ক্ষতি ন্যূনতম।

মোদীর ভাষণ এই পুনর্গঠিত দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও স্পষ্ট করেছে। তিনি পহেলগাম হামলাকে শুধুই সন্ত্রাস নয়, বরং ভারতের আত্মার উপর আঘাত হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। শুধু তাই নয়, একটি জাতিকে ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে বিভক্ত করার অপচেষ্টা বলে বিষোদ্গার করেছেন। “বিশ্ব দেখেছে, দেশ অনুভব করেছে, আর ভারত তার জবাব দিয়েছে,”* বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।