নয়া দিল্লি, ১৩ মে : পাকিস্তান জুড়ে চলছে সশস্ত্র বিদ্রোহের নতুন ঢেউ। বালুচ মুক্তি বাহিনী জানিয়েছে, তারা ‘অপারেশন হিরোফ’-এর আওতায় ৭১টি সমন্বিত হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানের ৫১টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। হামলার লক্ষ্য ছিল সামরিক কনভয়, গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর ঘাঁটি, পুলিশ স্টেশন, খনিজ পরিবহন কনভয় এবং জাতীয় সড়কপথ সংলগ্ন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো।
বিএলএ এক বিবৃতিতে বলেছে, “পাকিস্তানের অবস্থা এখন চূড়ান্ত ভঙ্গুর। যারা এখনো ভাবছে শান্তির আশ্বাসে কিছু হবে, তারা আসলে চোখ বন্ধ করে আছে বাস্তবতার সামনে।”
১১ মে প্রকাশিত বিবৃতিতে বিএলএ সরাসরি পাকিস্তানকে ‘জঙ্গি রপ্তানিকারক রাষ্ট্র’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, “পাকিস্তান শুধু একটি সন্ত্রাসের জন্মস্থান নয়, এটি একটি পারমাণবিক সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে।” লস্কর-ই-তৈয়েবা, জইশ-ই-মোহাম্মদ ও আইএসআইএস-এর মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক তুলে ধরেছে তারা।
বিএলএ দাবি করেছে, এই হামলা ছিল কেবল ধ্বংসের উদ্দেশ্যে নয়, বরং বৃহত্তর যুদ্ধ প্রস্তুতির অংশ – একে তারা অভিহিত করেছে “সামরিক কৌশল ও নিয়ন্ত্রণের পরীক্ষা” হিসেবে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা পাহাড়ে, শহরে এবং প্রতিটি ফ্রন্টে শত্রুকে পরাজিত করেছি।”
বিবৃতিতে ভারতের উদ্দেশে একটি কড়া বার্তাও দেওয়া হয়েছে – “যে রাষ্ট্রের হাতে রক্ত লেগে আছে, তার সঙ্গে আর শান্তির স্বপ্ন দেখা অনর্থক।” তারা ভারতের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তানের ‘ভণ্ডামি ও সাময়িক কূটনৈতিক নাটক’ নিয়ে আর প্রতারিত না হতে।
বিএলএ অভিযোগ করেছে, “বিশ্বশক্তির নীরবতা ও কৌশলগত স্বার্থ রক্ষা পাকিস্তানের মতো রাষ্ট্রকে আরো শক্তিশালী করে তুলছে।” তারা সতর্ক করেছে, “বিএলএ আর অনুমতির অপেক্ষায় থাকবে না। আমরা যুদ্ধ জারি রাখব যতক্ষণ না পাকিস্তান একটি সন্ত্রাসমুক্ত দক্ষিণ এশিয়ার পথে রুদ্ধ হয়ে যায়।”
বিবৃতিতে বিএলএ আরও জানিয়েছে, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা, বিশেষ করে জঙ্গি গোষ্ঠীর উপর নির্ভরতা, এখন গোটা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। তারা বলছে, এটি শুধুমাত্র বালুচিস্তান নয়, সমগ্র অঞ্চলের ‘একটি নতুন নিরাপত্তা অধ্যায়ের সূচনা’।
গোয়াদর বন্দর, খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ বালুচিস্তান, এবং আফগান-ইরান সীমান্তে অবস্থিত অঞ্চলের উপর কৌশলগত দখলদারি – এই সবকিছুই পাকিস্তানের জন্য এখন ঘোর সঙ্কট। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শক্তি বৃদ্ধি করছে বিএলএ।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বোঝাতে বিএলএ তাদের বিবৃতির শেষে বলেছে, “আমরা আর নিঃশব্দ দর্শক নই। আমরা দক্ষিণ এশিয়ার নতুন ভোরের রচয়িতা।”

