আগরতলা, ১২ মে: উত্তর ত্রিপুরার পানিসাগর মহকুমার দামছড়া থানাধীন রাহুমছড়া ভিলেজ কাউন্সিলের সুন্ধিবাসা এলাকায় সরকারি বন দপ্তরের জমি জবরদখলকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ, বনভূমি দখলের বিরোধিতায় প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছেন স্থানীয় এক বাসিন্দা।
জানা গিয়েছে, সুন্ধিবাসা এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বপাড়ার বাসিন্দা কামাল উদ্দিন কয়েক বছর আগে পিপলা ছড়া থেকে এসে সরকারি বনভূমি জবরদখল করে সেখানে বসত বাড়ি নির্মাণ করেন এবং স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। সম্প্রতি একই এলাকার পশ্চিম পাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা কৃষ্ণবাবু সিনহা অভিযোগ করেছেন, কামাল উদ্দিন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁর ব্যক্তিগত জমি একাধিকবার জবরদখলের চেষ্টা চালিয়েছে এবং জমিতে কাজ করতে গেলে বাধা সৃষ্টি করেছে।
এবিষয়ে কৃষ্ণবাবু জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে তাঁর নিজস্ব ফিসারির জল নিষ্কাশনের পাইপ বসাতে গেলে কামালের পুত্রদের বাধার সম্মুখীন হন। এমনকি, প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কৃষ্ণবাবুর দাবি, তাঁকে মারধর করে বস্তায় ভরে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
চরম উত্তেজনা ছড়ায় গত ১০ মে বিকেলে। কৃষ্ণবাবু তাঁর রাবার বাগানে যাওয়ার রাস্তা মাটি দিয়ে ভরাট করতে গেলে কামাল উদ্দিন, তাঁর স্ত্রী মিপতুন নেছা এবং পুত্র ফয়জুর রহমান দা ও লাঠি নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে আক্রমণের চেষ্টা চালায়। কৃষ্ণবাবু প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যান। ঘটনার প্রতিবাদে তিনি রাতেই দামছড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার প্রেক্ষিতে ১১ মে দুপুরে দামছড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত চালায়। তবে কৃষ্ণবাবুর অভিযোগ, তদন্ত হলেও এখন পর্যন্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে তিনি বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং পুলিশের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এদিকে, রাহুমছড়া ও পার্শ্ববর্তী ভিলেজ কাউন্সিলগুলোতে দিনের পর দিন সরকারি বনভূমি দখল করে বসতবাড়ি তৈরি করা হলেও বন দপ্তরের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। স্থানীয়দের দাবি, বন দপ্তরের গাফিলতি ও উদাসীনতার সুযোগ নিয়ে দখলদাররা নির্বিচারে গাছ কেটে রাবার বাগান ও পাকা ইমারত নির্মাণ করছে।
প্রসঙ্গত, প্রায় এক বছর আগে পানিসাগরের পেকুছড়ায় ঠিক এভাবেই বনভূমি দখল করে প্রায় ৩০টির বেশি উদ্বাস্তু পরিবার বসতি গড়ে তুলেছিল। বন দপ্তরের একাধিক নোটিশ দেওয়ার পরেও তাদের উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি।এই অবস্থায় সুন্ধিবাসা এলাকাতেও একই চিত্র ক্রমশ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে আগামী দিনে এইসব বনভূমি মরুভূমিতে পরিণত হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এখন দেখার বিষয়, বন দপ্তরের কর্তৃপক্ষ এই জবরদখল রোধে কার্যকর কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

