‘অপারেশন সিন্দুর’ প্রমাণ করেছে, পাকিস্তানের প্রতিটি ইঞ্চি ভারতের নাগালের মধ্যে : বিজেপি

নয়াদিল্লি, ১২ মে : ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর সফলতা নিয়ে সোমবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র ড. সম্বিত পাত্র বলেন, “এই অভিযান প্রমাণ করে দিয়েছে, পাকিস্তানের প্রতিটি ইঞ্চি ভারতের হাতে পৌঁছনোর আওতায়। এটা শুধু একটি সামরিক অভিযান নয়, বরং ভারতের পক্ষ থেকে সারা বিশ্বের উদ্দেশে একটি কড়া বার্তা।”

বিজেপি সদর দপ্তরে আয়োজিত এই সাংবাদিক সম্মেলনে পাত্র বলেন, “৭ মে পাকিস্তানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধসে পড়ে। মাত্র ২৫ মিনিটের অভিযানে বিশ্ব দেখেছে, সন্ত্রাসের ঘাঁটি ধ্বংস করতে ভারত কী করতে সক্ষম।”

২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহালগামে পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসীদের হাতে ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যুর পর এই অভিযান চালানো হয়। সম্বিত বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যেভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এই জবাব তার বাস্তব রূপ। এই সংবাদ সম্মেলন শুধুমাত্র তথ্য দেওয়ার জন্য নয়, এটি ভারতের আত্মবিশ্বাসের প্রকাশ।”

সম্বিত পাত্র দাবি করেন, অভিযানের আগেই প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রায় ২০টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন, যার মধ্যে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম। “বড় বড় ইসলামী রাষ্ট্রগুলিও এই পরিস্থিতিতে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে,” বলেন তিনি। তিনি আরও উল্লেখ করেন, পহালগাম হামলার পর প্রধানমন্ত্রী মোদী সৌদি সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে আসেন, যা পরিস্থিতির গুরুত্ব বোঝাতে যথেষ্ট।

সামরিক পদক্ষেপের পাশাপাশি ভারতের কূটনৈতিক কড়া পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন বিজেপি মুখপাত্র। তিনি বলেন, “৫০ বছরের মধ্যে প্রথমবার, ভারত সিন্ধু নদী জলচুক্তি স্থগিত করেছে। পাকিস্তানের প্রায় ৯০ শতাংশ জলচাহিদা এই নদীর উপর নির্ভরশীল। এই জল বন্ধ হয়ে গেলে তাদের কৃষি ও জিডিপি ২৫ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পাবে।”

অপারেশন সিন্দুর-এর দুই মূল উদ্দেশ্য ছিল — সন্ত্রাস দমন এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা। পাত্র বলেন, “আমরা শুধুমাত্র পাহাড়ি অঞ্চলের দূরবর্তী জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছি। কোনও সেনা ঘাঁটি লক্ষ্যবস্তু ছিল না। এই হামলায় বেসামরিক কোনও প্রাণহানি হয়নি।” তিনি জানান, এই অভিযানে নিহত জঙ্গিদের মধ্যে রয়েছে কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী আবু জুনদাল ও আবদুল রউফ। বিজেপি মুখপাত্র বলেন, “এই ভারত এখন আর সীমান্তে থেমে থাকে না। আমরা তাদের হৃদয়ে আঘাত করি — পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে।”

পাত্র একাধিক ছবি দেখান যেখানে পাকিস্তানের সামরিক কর্মকর্তারা সন্ত্রাসবাদীদের জাতীয় পতাকা জড়ানো কফিনে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। তিনি বলেন, “এই ছবি গুলোই প্রমাণ করে, পাকিস্তান সরকার ও সন্ত্রাসবাদীদের মধ্যে সরাসরি যোগসূত্র রয়েছে।” তিনি আরও জানান, হাফিজ আবদুর রউফ, যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ জঙ্গি, তিনিই এই জঙ্গিদের জানাজা নামাজ পড়ান।

সম্বিত পাত্র জোর গলায় দাবি করেন, “বিশ্বে এই প্রথম কোনও দেশ পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে ঢুকে তাদের সন্ত্রাস অবকাঠামো ধ্বংস করেছে। অপারেশন সিন্দুর ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের একটি ঐতিহাসিক মোড়।”