যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ফের উত্তেজনা, পাকিস্তানের উপর ক্ষোভ প্রকাশ বিদেশ মন্ত্রকের

নয়াদিল্লি, ১১ মে : শনিবার সন্ধ্যা ছটা নাগাদ কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়, পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সমঝোতা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতিতে সম্মতি তৈরি হয়েছে। কিন্তু এই ঘোষণার ঘণ্টা তিনেকের মধ্যেই সেই আশা ভঙ্গ হল। শ্রীনগর থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাওয়ায় উদ্বেগ ছড়ায়।

জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ট্যুইট করে প্রশ্ন তোলেন, “এ কী ধরনের সংঘর্ষবিরতি! গোটা শ্রীনগরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।” কিছু সময় পরে তিনি ফের লেখেন, “এটা কোনও যুদ্ধবিরতি নয়। শ্রীনগরে এয়ার ডিফেন্স ইউনিট সক্রিয় হয়ে উঠেছে।”

এই ঘটনার পর থেকেই সীমান্তবর্তী বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গোলাগুলির খবর আসতে থাকে। গুজরাটের কচ্চ এলাকায় ড্রোন দেখা যায়। লুধিয়ানা ও অমৃতসরে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়।

শনিবার রাত এগারোটা নাগাদ এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিদেশ সচিব বিক্রিম মিশ্রি বলেন, “গত কয়েক ঘণ্টায় পাকিস্তান একাধিকবার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করেছে। সাম্প্রতিকভাবে দুই দেশের ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনসের মধ্যে সমঝোতা হলেও, পাকিস্তান তা মানছে না।” তিনি জানান, বাহিনীকে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান যেন পরিস্থিতির গুরুত্ব বোঝে, সেই আবেদন জানানো হয়েছে।

এক সাংবাদিক সম্মেলনে কমোডর রঘু আর নায়ার বলেন, “পাকিস্তান যে দুঃসাহস দেখিয়েছে, তার কড়া জবাব দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও এমন কিছু ঘটলে তার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।” তিনি জানান, জল, স্থল ও আকাশপথে সমস্ত সেনা তৎপরতা বন্ধ করতে বলা হয়েছে।

বিদেশ মন্ত্রকের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সীমান্তের দিকে পাকিস্তানের সেনা এগোচ্ছে। পাশাপাশি, শ্রীনগর, অবন্তীপোরা ও উধমপুরের স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও হামলা চালিয়েছে তারা। কর্নেল সোফিয়া কুরেশি জানান, রাত ১.৪০ নাগাদ পাকিস্তান পঞ্জাব সীমান্তে মিসাইল ছুড়েছিল। ভারত তার উপযুক্ত জবাব দিয়েছে।

জানা গিয়েছে, জম্মুর একাধিক এলাকায় ড্রোন দেখা গিয়েছে। ভারতের এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম কাজ শুরু করেছে। সীমান্তে গোলাগুলিও চলছে। এমনকী যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পরও জম্মুতে ব্ল্যাকআউট করা হয়।

সংঘর্ষবিরতির ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান ফের আস্থা ভঙ্গ করেছে বলে মনে করছে প্রতিরক্ষা মহল। জম্মু থেকে পুঞ্চ পর্যন্ত সীমান্তে গোলাগুলি চলছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে তারা সম্পূর্ণ প্রস্তুত।