রাঁচি, ১০ মে — ঝাড়খণ্ড সরকার ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে বীর বুধু ভগত বিশ্ববিদ্যালয় রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় রাজ্যে রাজনৈতিক উত্তাপ তীব্র হয়েছে। বিজেপি এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে এবং মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের বিরুদ্ধে পরিবারবাদ চর্চার অভিযোগ তুলেছে। অন্যদিকে, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (ঝামুমো) সরকারের এই পদক্ষেপকে ঐতিহাসিক এবং সাহসিকতার প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করেছে।
৮ মে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি রাঁচিতে অবস্থিত এবং এর পূর্বতন নাম ছিল ভারতীয় জনসংঘের প্রতিষ্ঠাতা ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির নামে।
বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র অজয় সাহ জানান, “এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র একজন মহান দেশভক্ত নেতার অসম্মান নয়, বরং আদিবাসী নায়কদের মর্যাদার সঙ্গেও তামাশা।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, “যদি সরকারের সত্যিই সাহস থাকে, তবে ময়ূরাক্ষী নদীর উপর নির্মিত ‘শিবু সোরেন সেতু’র নাম বদলে বীর বুধু ভগতের নামে রাখুক।”
বিজেপির অভিযোগ, হেমন্ত সোরেন সরকার রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থান নিচ্ছে এমন সময়ে, যখন গোটা দেশ পাকিস্তান বিরোধী কড়া অবস্থানে রয়েছে। এছাড়াও, দলটি অভিযোগ করেছে যে মুখ্যমন্ত্রী নিজের পরিবারের সদস্যদের নামেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্প ও স্থাপনার নামকরণ করছেন—যেমন ‘সোনা-সোবরন’ ধুতি-শাড়ি প্রকল্প বা ‘শিবু সোরেন সেতু’।
অন্যদিকে, ঝামুমো এই সিদ্ধান্তকে আদিবাসী ইতিহাস এবং সংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে তুলে ধরেছে। দলের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র মনোজ পাণ্ডে বলেন, “যখন বীর বুধু ভগতকে সম্মান জানানো হলো, তখনই বিজেপির আসল মুখোশ খুলে গেছে।” তিনি শিক্ষামন্ত্রী সুদিব্য কুমার সোনুকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “এটি একটি সাহসী এবং প্রগতিশীল পদক্ষেপ।”
এই সিদ্ধান্তের পক্ষে এবং বিপক্ষে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক চললেও, স্পষ্ট যে ঝাড়খণ্ডে নামবদল ইস্যু একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিচয়ের লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে।

