আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের অর্থ সহায়তা পাকিস্তানকে, ভারত-পাক উত্তেজনা কমাবে না: ওমর আবদুল্লাহ

শ্রীনগর, ১০ মে : জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ শনিবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পাকিস্তানকে অর্থ সহায়তা প্রদানের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি মন্তব্য করেছেন, এই অর্থ সহায়তা ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান উত্তেজনা হ্রাসে কোনোভাবেই সহায়ক হবে না।

ওমর আবদুল্লাহ এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ লিখেছেন, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কীভাবে মনে করে উপমহাদেশে উত্তেজনা কমবে, যখন আইএমএফ মূলত পাকিস্তানকে সেই সব গোলাবারুদের জন্য টাকা দিচ্ছে, যেগুলো দিয়ে তারা পুঞ্চ, রাজৌরি, উরি, তাংধারসহ আরও অনেক এলাকায় ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে?” শনিবার পুঞ্চ জেলার বেসামরিক এলাকায় পাকিস্তানের ভারী কামান হামলায় অতিরিক্ত জেলা উন্নয়ন কমিশনার নিহত হন।

সূত্র জানিয়েছে, পাকিস্তান শ্রীনগরের বিমানঘাঁটিতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যার প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় সেনা দুইটি পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছে। গুলিবিদ্ধ বিমানের পাইলটদের সন্ধান চালানো হচ্ছে বলে সূত্র জানিয়েছে, তবে সরকারি নিশ্চিতকরণ এখনো আসেনি।

পাকিস্তান জম্মু শহরের রেহাড়ি আবাসিক এলাকাতেও হামলা চালিয়েছে, যেখানে একটি বাড়ি এবং বহু গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজৌরি ও পুঞ্চ জেলার নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC) বরাবর শনিবার সকালেও ভারী গোলাবর্ষণ অব্যাহত ছিল। ভারতীয় সেনা প্রতিউত্তরে পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে বেসামরিক অবকাঠামো রক্ষায় সক্রিয়ভাবে জবাব দিচ্ছে।

গত তিনদিন ধরে পাকিস্তান জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলে ধারাবাহিকভাবে ড্রোন হামলা চালাচ্ছে, যার বেশিরভাগই ভারতীয় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা ধ্বংস করা হয়েছে। শনিবার সকালে শ্রীনগরে দুটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ও জম্মুর আখনূর শহরে তিনটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

পুঞ্চের পুলিশ লাইন সরাসরি হামলার শিকার হলেও সেই ঘটনায় কোনো ভারতীয় প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। তবে বিভিন্ন বেসামরিক ঘরবাড়ি, স্কুল, ধর্মীয় স্থান—যেমন গুরুদ্বারা, মসজিদ এবং গীতা ভবন—গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত কয়েক দিনে নারী ও শিশু সহ অন্তত ১৬ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং আরও ৫৯ জন আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে কুপওয়াড়া, বারামুলা, উরি ও মেন্ধার।

চলমান গোলাবর্ষণে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে; হাজার হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাড়িঘর ছেড়েছেন। পুঞ্চে সব বাজার বন্ধ এবং জম্মু, সাম্বা, কাঠুয়া, রাজৌরি ও পুঞ্চ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় জম্মুতে পুরোপুরি ব্ল্যাকআউট কার্যকর করা হয়। রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে, ১২ মে পরিস্থিতি পর্যালোচনার আগে পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীরের সমস্ত স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। শ্রীনগর বিমানবন্দর বর্তমানে ভারতীয় বিমানবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে এবং সমস্ত বেসামরিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। গত তিনদিন ধরে শ্রীনগর থেকে সৌদি আরবগামী হজ ফ্লাইটও স্থগিত রয়েছে।