নয়াদিল্লি, ৭ মে : ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর আওতায় পরিচালিত নিশানাভেদী হামলায় জইশ-ই-মোহাম্মদের (JeM) প্রধান মাসুদ আজহারের ১০ জন পরিবারের সদস্য এবং ৪ জন ঘনিষ্ঠ সহযোগী নিহত হয়েছে বলে স্বয়ং আজহার এক বিবৃতিতে স্বীকার করেছেন।
এই অভিযানে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের (PoK) অন্তত ৯টি সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিতে নিশানা করা হয়, যার মধ্যে অন্যতম ছিল বাহাওয়ালপুরের মারকাজ সুবহান আল্লাহ – জইশ-ই-মোহাম্মদের সদর দপ্তর। এক বিবৃতিতে মাসুদ আজহার বলেন, “ভারতের এই বর্বর হামলায় আমার পরিবারের ১০ সদস্য ও আমার চার বিশ্বস্ত সাথী শহিদ হয়েছে।” নিহতদের মধ্যে রয়েছেন তাঁর বড় বোন ও তাঁর স্বামী, ভ্রাতুষ্পুত্র ও তাঁর স্ত্রী।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, এই হামলাগুলির উদ্দেশ্য ছিল সীমান্ত পেরিয়ে সক্রিয় সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির পরিকাঠামো ধ্বংস করা। **জইশ-ই-মোহাম্মদ, লস্কর-ই-তইয়্যবা এবং হিজবুল মুজাহিদিন**-এর গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিগুলিতে রাতের আঁধারে পরিচালিত হয় এই বিমান অভিযান।
নিশানা করা প্রধান ঘাঁটিগুলোর মধ্যে ছিল বাহাওয়ালপুর (জইশ-ই-মোহাম্মদের সদর দপ্তর, আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ১০০ কিমি দূরে), মুরিদকে (লস্কর-ই-তইয়্যবার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, সাম্বা সীমান্ত থেকে ৩০ কিমি দূরে), গুলপুর (পুঞ্চ-রাজৌরি অঞ্চলে, নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে ৩৫ কিমি দূরে, LeT ঘাঁটি), সাওয়াই (পিওকে-এর টাংধার সেক্টরে অবস্থিত এলইটি ক্যাম্প), বিলাল ক্যাম্প (জইশ-ই-মোহাম্মদের লঞ্চপ্যাড), কোটলি এলইটি ক্যাম্প (রাজৌরির বিপরীতে, এলওসি থেকে ১৫ কিমি), বারনালা ক্যাম্প (রাজৌরির বিপরীতে, এলওসি থেকে ১০ কিমি), সরজাল ক্যাম্প (সাম্বা-কাঠুয়া সীমান্তের কাছে, আইবি থেকে ৮ কিমি, জইশ ঘাঁটি), মেহমূনা ক্যাম্প (সিয়ালকোটের কাছে, আইবি থেকে ১৫ কিমি, হিজবুল মুজাহিদিন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র)
মাসুদ আজহার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সরাসরি আক্রমণ করে বলেন, “এই জুলুম সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এখন আর কোনো দয়া আশা করা যাবে না।” তাঁর এই হুমকিস্বরূপ বিবৃতিকে ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তবে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, ভবিষ্যতের যেকোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে তারা সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিল পহেলগামে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার জবাবে ভারতের তরফে এই প্রতিশোধমূলক অভিযান চালানো হয়েছে। পহেলগামে ২৬ জন নিরীহ নাগরিক নিহত হয়েছিলেন।

