নয়াদিল্লি, ৪ মে: ঐতিহাসিক কোহিনূর হীরার ভবিষ্যৎ নিয়ে আবারও আলোচনার ঝড় উঠেছে। ব্রিটেনের সংস্কৃতি, মিডিয়া ও ক্রীড়া মন্ত্রী লিসা নান্ডির সাম্প্রতিক মন্তব্যে নতুন করে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। ভারত-ব্রিটেনের সাংস্কৃতিক সহযোগিতা নিয়ে চলা আলোচনায় এই অমূল্য হীরার প্রসঙ্গ ফের উঠে আসে, যা ভারতের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গর্বের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
১০৮ ক্যারেটের কোহিনূর হীরা ১৮৪৯ সালে পাঞ্জাবের শেষ শাসক মহারাজা দলীপ সিং-এর মাধ্যমে ব্রিটিশ রানী ভিক্টোরিয়ার কাছে সমর্পিত হয়। এরপর ১৯৩৭ সালে এটি ‘কুইন মাদার’-এর রাজমুকুটে বসানো হয়। সেই সময় থেকেই ভারত এই হীরাটি ফেরত চেয়ে আসছে।
লিসা নান্ডি সম্প্রতি দিল্লি সফরে এসে সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে জানান, “আমরা ভারত সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করছি, যাতে উভয় দেশের মানুষ এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সুফল ভোগ করতে পারে।” যদিও কোহিনূর ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে তিনি কোনো স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দেননি, তবে তার এই বক্তব্যে ভারতের জনগণের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে।
নান্ডি জানান, ভারত ও ব্রিটেন চলচ্চিত্র, ফ্যাশন, টেলিভিশন, সঙ্গীত ও গেমিং শিল্পে যৌথভাবে কাজ করার পরিকল্পনা করছে। ব্রিটেনের সায়েন্স মিউজিয়াম গ্রুপ ভারতের ন্যাশনাল সায়েন্স মিউজিয়াম গোষ্ঠীর সঙ্গে যৌথ প্রদর্শনী এবং সংগ্রহশালা ভিত্তিক উদ্যোগে কাজ করছে।
দিল্লিতে ভারতের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতের সঙ্গে এক সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন লিসা নান্ডি। এই চুক্তির মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সাংস্কৃতিক, ঐতিহ্য সংরক্ষণ, সংগ্রহশালা পরিচালনা এবং ডিজিটাল সংরক্ষণে সহযোগিতা আরও মজবুত হবে। ব্রিটিশ কাউন্সিল, ব্রিটিশ মিউজিয়াম, ব্রিটিশ লাইব্রেরি এবং ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড অ্যালবার্ট মিউজিয়ামের মতো প্রতিষ্ঠান এতে যুক্ত থাকবে।
যদিও এখনো পর্যন্ত ব্রিটেন সরকার কোহিনূর ফেরানোর বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি, তবে এই নতুন উদ্যোগ এবং মন্তব্য ভারতের দাবিকে নতুন গতি দিতে পারে। এখন দেখার বিষয়, ইতিহাসের এই অমূল্য রত্ন একদিন সত্যিই নিজের জন্মভূমিতে ফিরতে পারে কি না।

