গোয়া, ২ মে — গোয়ার শিরগাঁও মন্দিরে বাৎসরিক লয়রাই যাত্রা উপলক্ষে শুক্রবার অনুষ্ঠিত ধর্মীয় শোভাযাত্রায় ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ভিড়ের চাপে পদদলিত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭ জন, আহত হয়েছেন ৩০ জনেরও বেশি মানুষ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, আচমকা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বিশাল জনসমাগমে, যার ফলে মানুষজন দিকবিদিক ছুটতে শুরু করে। একাংশের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলার ফলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। মন্দিরের স্বেচ্ছাসেবক ও স্থানীয়রা দ্রুত সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন এবং বহুজনকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান। ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ ও জরুরি পরিষেবা কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। আহতদের অবিলম্বে স্থানীয় হাসপাতালগুলিতে ভর্তি করা হয়।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। রাষ্ট্রপতি এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ লেখেন: “শিরগাঁও, গোয়ায় পদদলিত হয়ে বহু প্রাণহানির ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত। শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলির প্রতি আমার সমবেদনা এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।”
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এক্স-এ পোস্ট করে জানানো হয়েছে, “শিরগাঁও, গোয়ায় পদদলিত হয়ে প্রাণহানির ঘটনায় আমি দুঃখিত। প্রিয়জন হারানোদের প্রতি সমবেদনা জানাই। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।” প্রধানমন্ত্রী মোদী ইতিমধ্যেই গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওন্ত-এর সঙ্গে ফোনে কথা বলে পরিস্থিতির বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়েছেন এবং কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী সাওন্ত এক্স-এ পোস্ট করে জানিয়েছেন, “আজ সকালে শিরগাঁওয়ের লয়রাই যাত্রায় মর্মান্তিক পদদলিতের ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত। আমি হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গে দেখা করেছি এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সব রকম সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে গোটা পরিস্থিতি নজরে রাখছি।”
লয়রাই যাত্রা ও দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপট : প্রতি বছর উত্তর গোয়ার শিরগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হয় শ্রী লয়রাই যাত্রা, যেখানে হাজার হাজার ভক্ত অংশ নেন। ‘ধোঁদ’ নামে পরিচিত ভক্তরা খালি পায়ে জ্বলন্ত কয়লার উপর দিয়ে হাঁটার রীতি পালন করেন। এবারের যাত্রায় অতিরিক্ত ভিড় ও জনসমাগমের হঠাৎ বৃদ্ধি পদদলিতের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, যাত্রার রাস্তায় একটি ঢালু অংশে হঠাৎ ভিড় চাপে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে, ফলে পদদলিতের ঘটনা ঘটে। পর্যাপ্ত জনসমাবেশ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না থাকায় এই বিপর্যয় আরও বেড়ে যায়। স্বাস্থ্য পরিকাঠামো প্রস্তুত গোয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিশ্বজিৎ রানে জানিয়েছেন, সমস্ত জেলা হাসপাতালগুলিকে হাই অ্যালার্টে রাখা হয়েছে। গোয়া মেডিক্যাল কলেজ সহ অন্যান্য হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসার পরিকাঠামো জোরদার করা হয়েছে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোয়া জুড়ে।

