জাতীয় সড়কের সংস্কার কাজে চলছে চরম অনিয়ম! মাস না পেরোতেই ভেঙে যাচ্ছে কোটি টাকার রাস্তা

আগরতলা, ৩ মে : বহু কোটি টাকার বরাদ্দ, অথচ রাস্তার হাল করুণ! সরকারি নির্দেশিকা উপেক্ষা করে ত্রিপুরার গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সড়ক সংস্কারে চলছে চরম অনিয়ম—এমনটাই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

চুরাইবাড়ি সেলটেক্স গেট থেকে বাগবাসা পর্যন্ত জাতীয় সড়কের ১১ কিলোমিটার রাস্তার কাজ নিম্নমানের—এই অভিযোগে সরব এলাকাবাসী। জানা গিয়েছে, তিন কিলোমিটার রাস্তার কাজের দায়িত্ব পেয়েছিলেন ঠিকাদার দীপক কর। দ্রুতগতিতে কাজ শেষ করতে গিয়ে তিনি এতটাই নিম্নমানের কাজ করেছেন যে, মাসখানেকের মধ্যেই রাস্তার পিচ ও পাথর উঠে পড়েছে। ভারী যান চলাচলের রাস্তা এইভাবে ভেঙে পড়ায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে কাজের গুণগত মান নিয়ে।

রাস্তার কাজের সময় সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পরিমাপ যন্ত্রের ব্যবহার, ক্রস লাইন স্থাপন, এবং প্রতিনিয়ত ইঞ্জিনিয়ার তদারকি—এই সমস্ত প্রয়োজনীয় বিষয় কার্যত উপেক্ষিত ছিল। দীপক কর ও তাঁর সহকারীরা কাজ শেষ করে এলাকা ছেড়ে চলে গেলেও, অভিযোগ উঠছে তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এখানেই শেষ নয়। শনিছড়া ফরেস্ট বিট অফিস সংলগ্ন রাস্তার পরবর্তী চার কিলোমিটার অংশের দায়িত্বে ছিলেন “মিনামতি এন্টারপ্রাইজ”-এর রাজু দেবনাথ। এখানেও চলছে একই অনিয়ম ও নিম্নমানের কাজ। চাঁনপুর এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, কোথাও আধা ইঞ্চি, কোথাও দেড় ইঞ্চি পিচ ঢালাই—পর্যাপ্ত পরিমাণে ধুলোবালি পরিষ্কার না করেই চলছে কাজ।

অভিযোগ আরও গুরুতর—ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়মিত উপস্থিতির অভাবে এখন সাইড ম্যানেজার প্রমোদ ভৌমিকই কার্যত ইঞ্জিনিয়ারের ভূমিকায় কাজ সামলাচ্ছেন! অথচ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, একজন অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারকে নিয়মিত তদারকি করতে হয়।

স্থানীয়দের আশঙ্কা, বর্ষার আগেই যদি এই রাস্তার হাল এমন হয়, তাহলে বর্ষায় তা মৃত্যুফাঁদে পরিণত হওয়াটা সময়ের অপেক্ষা মাত্র। উল্লেখ্য, এই রাস্তার কাজের জন্য পশ্চিম ত্রিপুরা আসনের সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব সংসদে বহুবার বিষয়টি উত্থাপন করে বরাদ্দ করিয়েছিলেন কোটি কোটি টাকা।

জেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় বিধায়ক এই ব্যাপারে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, এখন নজর সেদিকেই।