ক্রাইস্টচার্চ(নিউজিল্যান্ড), ১ মে : নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ দ্বীপের বৃহত্তম শহর ক্রাইস্টচার্চে বৃহস্পতিবার প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে আকস্মিক বন্যা দেখা দিলে শহরটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে, রাজধানী ওয়েলিংটনে বয়ে যাওয়া ১৫০ কিলোমিটার বেগের ঝড়ে সৃষ্ট বিধ্বংসী পরিস্থিতির জন্য দেশে প্রথমবারের মতো রেড উইন্ড ওয়ার্নিং জারি করেছে মেট সার্ভিস।
দেশটির অন্যান্য অংশেও প্রবল তুষারপাত ও বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়ে, যদিও বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেল পর্যন্ত কোনো প্রাণহানি বা গুরুতর আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। ওয়েলিংটন শহরের পরিস্থিতি ভয়াবহ। শহরের বিভিন্ন অংশে প্রায় ১,০০০ বাড়ি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন, বন্ধ রয়েছে বিমান ও ফেরি পরিষেবা। রয়্যাল নিউজিল্যান্ড ব্যালেট তাদের সন্ধ্যার অনুষ্ঠান বাতিল করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ঝড়ের প্রভাবে গাছ ভেঙে পড়া ও বাতাসে উড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ মানুষের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। নাগরিকদের ঘরে অবস্থান, ভ্রমণ পরিহার এবং দরজা-জানালা থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ক্রাইস্টচার্চে প্রবল বৃষ্টিতে নদীর জল উপচে পড়েছে। রাস্তা ডুবে গেছে এবং আশঙ্কা করা হচ্ছে, বন্যার জল আবাসিক এলাকায় ঢুকে পড়তে পারে। স্থানীয় ও জাতীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মার্ক মিচেল জানিয়েছেন, আশপাশের কিছু গ্রামীণ এলাকাতেও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ দ্বীপজুড়ে জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। যার মধ্যে রয়েছে প্রবল বৃষ্টি, তীব্র সাগর উত্তালতা ও দক্ষিণ দ্বীপের কিছু অংশে ভারী তুষারপাত। তবে আবহাওয়া দপ্তরের মতে, এই দুর্যোগ শুক্রবার নাগাদ কমে আসবে।
বিশ্বের অন্যতম বায়ুপ্রবণ শহর ওয়েলিংটন, যেখানে প্রায় অর্ধেক দিনেই ঘণ্টায় ৬৩ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বইতে দেখা যায়, এবার অস্বাভাবিকভাবে শক্তিশালী দক্ষিণী ঝড়ের কবলে পড়েছে, যা জীবনঘাতী হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন ওয়েলিংটনের জরুরি ব্যবস্থাপনা প্রধান ড্যান নিলি। নিউজিল্যান্ডের পাঁচ মিলিয়ন জনসংখ্যার এই দ্বীপদেশে এমন চরম আবহাওয়া নতুন নয়। তবে এত বিস্তৃতভাবে সতর্কতা জারির ঘটনা বিরল।

