আগরতলা, ২৯ এপ্রিল : উপজাতি সম্প্রদায়ের প্রায় ৯০ শতাংশ লোকই তিপরা মথার সর্মথনে রয়েছে। বাকি ১০ শতাংশ লোককে দলে আসার জন্য সাদর আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রদ্যোত। আজ সামাজিক মাধ্যমে লাইভে এসে এমনটাই দাবি করে শাসক দল বিজেপিকে চাপে রাখতে চাইছেন তিপরা মথার প্রাক্তন সুপ্রিমো তথা এমডিসি প্রদ্যোত কিশোর দেবর্বমণ। কারণ, সামনেই এডিসি এবং আঠাশের বিধানসভা নির্বাচন। আজ থেকেই চাপের রাজনীতি খেলা শুরু করেছেন তিনি।
এদিন তিনি বলেন, বিলোনিয়া বল্লামুখা এলাকায় আন্তর্জাতিক সীমানা নির্ধারণ আইনকে লঙ্ঘন করে বাংলাদেশ সীমান্তে বাঁধ নির্মাণ করছে। এরই প্রতিবাদে গতকাল বনকর উত্তর পাড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সামিল হয়েছে তিপরা মথার কর্মী ও সর্মথকরা। তারপর থেকে গোটা দেশে তিপরা মথার নিয়ে জোর চর্চা চলছে। কারণ, গতকাল ভারত এবং বাংলাদেশের ইস্যু নিয়ে তিপরা মথা নিজেদের শক্তির জানান দিয়েছে। যে দেশবাসীকে বুঝিয়ে দিয়েছে বিপদজনক পরিস্থিতিতে ভারতের হয়ে গোটা দেশে আন্দোলনে নামার সার্মথ্য রাখি। এর জন্য তিপরা মথার যুব সংগঠনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি।
এদিন তিনি আরও বলেন, বিগত দিনে তিপ্রাসার নিজেদের দাবি জানানে তাঁদের ভারতবিরোধী বলা হতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে গোটা দেশবাসী বুঝতে পেরেছে তিপ্রাসা কখনো ভারতবিরোধী মনোভাব নিয়ে কাজ করে নি। তাঁরা বরাবর ভারতকে ভালোবেসে এসেছে। তাঁরা শুধু অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই জারি রেখেছে। কিন্তু তিপ্রাসাদের মধ্যে ফাঁটল ধরাতে অনেকেই চেষ্টা করছে। সামাজিক মাধ্যমে ককবরক ভাষায় রোমান হরফ ব্যবহারের দাবিতে কেন তিপরা মথা আনদোলন করছে না তা নিয়ে ভুল মন্তব্য করছে। সমালোচনাকারীদের বিরুদ্ধে তাঁর স্পষ্ট বার্তা, ককবরক ভাষায় রোমান হরফ ব্যবহারের দাবির সাথে তিপরা মথা ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই জারি রাখবে।
এদিন তিনি জোর গলায় বলেন, ককবরক জন্য রোমান লিপি ব্যবহারের দাবি ত্রিপুরার আদিবাসীদের দীর্ঘস্থায়ী আন্দোলন। কোকবোরোকের জন্য রোমান লিপি গ্রহণের পক্ষে সোচ্চার হয়েছি এবং এই দাবির সাথে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছি। আমরা ভারতীয় সংবিধানের ৮ তম তফসিলে ককবরক ভাষার অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কিছু সংস্থার সাম্প্রতিক প্রস্তাবগুলির সাথে একমত নই। যার সরকারী লিপি হিসাবে শুধুমাত্র দেবনাগরী বা বাংলা চাইছে। বাংলা এবং দেবনাগরী হরফ বেছে নেওয়ার প্রস্তাবেই আমার আপত্তি রয়েছে। উত্তর-পূর্বের অন্যান্য আদিবাসী ভাষা, যেমন মিজোরামের মিজো, এবং মেঘালয়ের গারো, খাসি এবং জৈন্তিয়া। ওই সব রাজ্যগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের ভাষার জন্য রোমান লিপি ব্যবহার করে। এমনকি ৮ম তফসিল স্বীকৃতি ছাড়াই নজির স্থাপন করেছে। তাই রাজ্য সরকারের কাছে ককবরক ভাষা রোমান হরফ ব্যবহারে স্বীকৃতির জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, তিপরা মথা এই দাবিতে ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। এই সমস্যাগুলির সমাধান করে ককবরক সুরক্ষা, সংরক্ষণ এবং বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য বলে বিশ্বাস করেন তিনি।
তাঁর দাবি, এখনো পর্যন্ত ৯০ শতাংশ তিপ্রাসা আমার সঙ্গে রয়েছে। বাকি দশ শতাংশ যারা আমার সঙ্গে নেই। তাদের হয়তো কিছুই মিলছে না। তারা যেদিন রাজনৈতিক সুবিধা পাবে আমার সঙ্গেই আসবে। তবুও আমি তাদেরকে সাদরে আমার সঙ্গে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। এমনটাই দাবি করে শাসক দল বিজেপিকে চাপে রাখতে চাইছেন তিনি। কারণ, সামনপই এডিসি এবং আঠাশের বিধানসভা নির্বাচন।

