আগরতলা, ১৭ এপ্রিল: অসময়ে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় জুমচাষীদের ফলন প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। এর প্রভাব সরাসরি পড়েছে ওই অঞ্চলের মানুষের দৈনন্দিন জীবনে।এমন সংকটের মাঝেও তেলিয়ামুড়ার হাজরাপাড়া এলাকার এক স্কুল পড়ুয়া ছাত্রী তার পরিবারকে সহায়তা করার জন্য সাহসিকতার সঙ্গে কঠোর পরিশ্রম করছে।
ঘটনার বিবরণে জানা গিয়েছে, মুঙ্গিয়াকামী ব্লকের কাকড়াছড়া এডিসি ভিলেজের অন্তর্গত একটি প্রত্যন্ত গ্রাম হাজরাপাড়া যেখানে আনুমানিক চল্লিশ থেকে পঞ্চাশটি পরিবার বসবাস করে। গ্রামটি মূলত নির্ভরশীল ছিল জুমচাষের উপর। কিন্তু এবছর অসময়ে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ফলন প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। এর প্রভাব সরাসরি পড়েছে ওই অঞ্চলের মানুষের দৈনন্দিন জীবনে। খাবার, জীবনধারণের মৌলিক প্রয়োজন মেটানো নিয়ে এক বিরাট অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
এমন সংকটের মাঝেও এলাকার এক স্কুল পড়ুয়া ছাত্রী তার পরিবারকে সহায়তা করার জন্য সাহসিকতার সঙ্গে কঠোর পরিশ্রম করছে। পড়াশোনা এবং সংসারের অবস্থা সামাল দিতে একদিকে স্কুলের বই অন্যদিকে পুরনো ঐতিহ্য অনুযায়ী পাছড়া তৈরির কাজে নেমে পড়েছে সে। এক অনন্য উদ্যোগের সঙ্গে, সে বাজার থেকে সুতার সংগ্রহ করে ঐতিহ্যবাহী পাছড়া তৈরি করে বিক্রি করছে।
এবিষয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ছাত্রীর বলেন, জুমের ফলন এবছর ভালো হয়নি, ফলে সংসারে দুরাবস্থা। আমি পড়াশোনার ফাঁকে এই পাছড়া তৈরি করছি। যাতে কিছু অর্থ সংগ্রহ করতে পারি এবং পরিবারের কাজে আসতে পারি। এছাড়া, সে আরও জানায়, বাজার থেকে সুতার দাম বেড়ে গেছে। ফলে আগে যেভাবে লাভ হতো তা আর হয় না। তবে যা কিছু উপার্জন হয়, তা দিয়ে কিছুটা হলেও পরিবারের সহায়তা করতে পারি, এটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।
এ যেন এক দৃষ্টান্ত, যে সংকটের মাঝে আমরা যে কোনো ছোট উদ্যোগের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে পারি, সেটাই প্রমাণ করে চলেছে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

