আন্দোলন জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার, কিন্তু তা যেন ধ্বংসাত্মক রূপ না নেয় লক্ষ্য রাখতে হবে : প্রাক্তন সাংসদ

আগরতলা, ২২ মার্চ : জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে আন্দোলন করার। কিন্তু সেই আন্দোলন যেন ধ্বংসাত্মক রূপ না নেয় সেদিকেই লক্ষ্য রাখতে হবে। আজ প্রদেশ বিজেপি ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে ককবরক ভাষায় রোমান হরফ ব্যবহারের দাবিতে তিপরা মথার আন্দোলনকে নিয়ে এমনটাই বললেন প্রাক্তন সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা। সাথে তিনি যোগ করেন, আন্দোলনের নাম করে জরুরি পরিষেবার সাথে যুক্ত যানবাহন আটক করা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা একদম উচিত হয় নি।

এদিন রেবতী ত্রিপুরা বলেন, শাসক দলের শরিক দল তিপরা মথা। ককবরক ভাষায় রোমান হরফ ব্যবহারের দাবি দীর্ঘদিন ধরে চলছে। কিন্তু গতকাল বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক (ডাঃ) মানিক সাহা বলেছেন ককবরক ভাষায় রোমান হরফ ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করবে সরকার। তারপর তিপরা মথা যুব সংগঠন কেন আন্দোলন প্রত্যাহার করছে না সেটাই প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে। তাঁর কথায়, জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে আন্দোলন করার। কিন্তু সেই আন্দোলন যেন ধ্বংসাত্মক রূপ না নেয় সেদিকেই লক্ষ্য রাখতে হবে। পাশাপাশি, সাধারণ মানুষ যেন ভোগান্তির শিকার না হয় সেদিকে আন্দোলনকারীদের নজর দিয়ে হবে। কিন্তু দেখা গিয়েছে আন্দোলনের নাম করে জরুরি পরিষেবার সাথে যুক্ত যানবাহন আটক করা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা একদম উচিত হয় নি। তাই তিনি আপামর তিপ্রাসাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন।

এদিন ওই সাংবাদিক সম্মেলনে প্রদেশ বিজেপির মুখপাত্র সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২৭৮০৪.৬৭ কোটি টাকা বাজেট পেশ করা হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বছরে ৩২৪২৩.৪৪ কোটি টাকার বাজেট পেশ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, বলে জানান তিনি। রাজ্যের সমাজের অন্তিম ব্যক্তিদের কথা মাথয় রেখে এই বাজেট পেশ করা হয়েছে। তাঁর কথায়, বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ১৫ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছিল। সেই জায়গায় গত সাত বছরে মধ্যে বিজেপি সরকার বাজেটে ১০৩ গুন বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা ত্রিপুরায় জন্য একটি নতুন ইতিহাস তৈরী হয়েছে। তাছাড়া, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেটে মূলধন ব্যয় ৭,৯০৩ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। যা ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের বাজেটের তুলনায় ১৯.১৪% বেশি। তেমনি, বিজেপি সরকার বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের জন্য ১৯৪৮.৬৯ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে, যা ২০২৪-২৫ সালের বাজেটের তুলনায় ১২.৮৯% বেশি।

এদিন তিনি বলেন, ত্রিপুরা সরকার মাতৃ শক্তিকে জাগ্রত করে তুলতে নতুন প্রকল্প ‘মুখ্যমন্ত্রী কন্যা বিবাহ যোজনার প্রবর্তন ঘোষণা দিয়েছে। এর আওতায়, রাজ্য সরকার অন্ত্যোদয় পরিবারের একজন কন্যা সন্তানের বিয়ের খরচ বহন করবে। রাজ্য সরকার ৫০,০০০ টাকা ব্যয় করবে। মহকুমা পর্যায়ে গণবিবাহ অনুষ্ঠিত হবে। এই উদ্দেশ্যে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তাছাড়া, ত্রিপুরায় সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদের জন্য বাজেট ঘোষণা হতেই উপহার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গতকাল আরো ৩% মহার্ঘ্য ভাতা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। তাতে অনেক সরকারি কর্মচারী উপকৃত হবে। এদিন তিনি আরো বলেন, ত্রিপুরা সরকার মানবিক বাজেট পেশ করেছে। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে ঐতিহাসিক বাজেট পেশ করার জন্য বিজেপির তরফ থেকে মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক (ডাঃ) মানিক সাহা, অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *