মেঘালয়ে ৩.৫ শতাংশ সীমার নীচে রেখে ১,৯৭০ কোটি টাকার ঘাটতি বাজেট পেশ মুখ্যমন্ত্রী কনরাডের

শিলং, ৫ মাৰ্চ (হি.স.) : আজ বুধবার মেঘালয় বিধানসভায় চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের জন্য মুখ্যমন্ত্রী কনরাড কে সাংমা ১,৯৭০ কোটি টাকার ঘাটতি বাজেট পেশ করেছেন, যা গ্রস স্টেট ডোমেস্টিক প্রাডাক্ট (জিএসডিপি)-এর প্রায় ২.৯৬ শতাংশ। ঋণ বাদ দিলে মোট প্রাপ্তি ২৫,৬২৭ কোটি টাকা এবং ঋণ পরিশোধ ছেড়ে আনুমানিক মোট ব্যয় ২৭,৫৯৭ কোটি টাকা। যার ফলে রাজস্ব ঘাটতি দেখিয়েছেন ১,৯৭০ কোটি টাকা।

২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করে অর্থ দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা বলেন, ‘আমি আনন্দের সাথে উল্লেখ করছি, রাজস্ব ঘাটতি ৩.৫ শতাংশের অনুমোদিত সীমার নীচে বজায় রাখা হয়েছে।’ বাজেটের এস্টিমেটকে (প্ৰাকক্কলন) জলবায়ু খাতে ৫,৪২১ কোটি টাকা, যুবাদের খাতে ৩,৩২৯ কোটি টাকা এবং জেন্ডার খাতে ৬,২১৯ কোটি টাকা, এই দুই বিভাগে শ্রেণিবদ্ধ করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘এই বিভাগগুলিতে পূর্ববর্তী বাজেট অ্যালক্যাশনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।’

সদনে সাংমা জানান, ‘চলতি ২০২৫-২৬ অৰ্থবৰ্ষে কেন্দ্র থেকে মেঘালয়ে মোট আনুমানিক স্থানান্তর ২০,৫৬৮ কোটি টাকায় উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা চলতি বছরের সংশোধিত অনুমান ১৯,২৪২ কোটি টাকা থেকে বেশি।’ তিনি বলেন, ‘এই প্রবৃদ্ধি মূলত ভারতের মজবুত অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতা দ্বারা পরিচালিত। উল্লেখযোগ্যভাবে, কেন্দ্রীয় করের অংশ ২০২৫-২৬ সালে ১০.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১০,৯১০ কোটি টাকা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা চলতি বছরের ৯,৮৭০ কোটি টাকা থেকে বেশি।’

অৰ্থমন্ত্ৰী তথা মুখ্যমন্ত্ৰী বলেন, ‘তাছাড়া, রাজ্য সরকার কর এবং কর বহির্ভূত রাজস্ব উন্নত করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রাজ্যের নিজস্ব কর রাজস্ব উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা চলতি বছরে ৪,০৪১ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।’

সাংমা বলেন, ‘আমি ২০২৫-২৬ সালে রাজ্যের নিজস্ব কর রাজস্ব ৪,২২৬ কোটি টাকায় পৌঁছানোর পূর্বাভাস দিচ্ছি। এর মধ্যে রয়েছে ২,০৯৪ কোটি টাকা জিএসটি, ১,১৮০ কোটি টাকা বিক্রয় ও বাণিজ্যের উপর কর এবং ৬৮২ কোটি টাকা আবগারি।’

তিনি বলেন, ‘২০২৮ সালের মধ্যে মেঘালয়ের ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সরকার রাজ্যের অর্থনীতি তার লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথে।’ ২০২৩ থেকে ২০২৬ সময়কালের জন্য বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ১২.৭ শতাংশ এবং রাজ্য ২০২৮ সালের মধ্যে তার লক্ষ্য অর্জনে নিশ্চিত, বলেন মুখ্যমন্ত্ৰী।

কনরাড সাংমা বলেন, ‘ইতিমধ্যে রাজ্য বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে ২,১৭৬ কোটি টাকা, কৃষি খাতে ৪৫০ কোটি টাকা, শিক্ষা খাতে ৩,৬৫৪ কোটি টাকা এবং বিদ্যুৎ খাতে ১,০৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।’

অধিকন্তু মুখ্যমন্ত্ৰী সাংমা ঘোষণা করেছেন, এবারের বাজেটে ক্রমবর্ধমান পর্যটন খাতকে উৎসাহিত করা হয়েছে এবং ২০২৫-২৬ সাল থেকে ২,০০০ নতুন হোম-স্টে উদ্যোক্তাদের উপকৃত করার জন্য রাজ্য সরকারের ভরতুকি ৩৫ শতাংশ থেকে ৪৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে।

এছাড়া ২০২৫ অৰ্থবৰ্ষের বাজেটে একটি উল্লেখযোগ্য শিক্ষা সহায়তা ব্যবস্থা ঘোষণা করেছেন, যাতে রাজ্য জুড়ে মাধ্যমিক-পরবর্তী শিক্ষার্থীদের জন্য যথেষ্ট আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্ৰী। সিএম স্কলারশিপ স্কিম নামে নতুন ঘোষিত বৃত্তি প্রকল্পটি শিক্ষার্থীদের বার্ষিক অতিরিক্ত ৬,০০০ টাকা প্রদান করবে, যা বিদ্যমান কেন্দ্রীয় সরকারের বৃত্তির পরিপূরক। এ সম্পৰ্কে মুখ্যমন্ত্ৰী বলেন, এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো, উচ্চশিক্ষা গ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে আর্থিক বোঝা কমানো এবং শিক্ষাগত ক্ষমতায়নের প্রতি রাজ্য সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করা। এই সম্পূরক আর্থিক সহায়তা প্রবর্তনের মাধ্যমে মেঘালয় আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীকে ম্যাট্রিকুলেশন স্তরের বাইরে তাঁদের শিক্ষা চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করার চেষ্টা করবে, যার ফলে রাজ্যে উচ্চশিক্ষায় ভর্তির হার বৃদ্ধি পাবে, বলেন করে অর্থ দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *