সরকার রাজ্যের সাহিত্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতিকে রক্ষা ও প্রসারে নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে : মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ২১ ফেব্রুয়ারি : রাজ্যের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও পরম্পরাকে দেশ বিদেশের মানুষের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে বেসরকারি সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘উড়ান’-এর উদ্যোগে আয়োজিত তিনদিনব্যাপী ত্রিপুরা লিটারেচার ফেস্টিভলের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার রাজ্যের সাহিত্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতিকে রক্ষার জন্য এবং এর প্রসারে নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। সাহিত্য সংস্কৃতির বিকাশে প্রতি বছর আগরতলা বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগরতলার বাইরে অন্যান্য মহকুমাতেও বইমেলা আয়োজিত হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে রাজ্যের সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করা। এছাড়াও রাজ্য সরকারের উদ্যোগে অটল কবিতা ও সাহিত্য উৎসব এবং নাট্য উৎসবের আয়োজন করা হয়। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর সারা বছর রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে ১৯টি জনজাতি সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী রয়েছে। তাদের প্রত্যেকের নিজস্ব সংস্কৃতি ছাড়াও বাঙালি ও মণিপুরী সম্প্রদায়ের ভাষা গোষ্ঠীর মানুষের উজ্জ্বল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজন্য সময়কাল থেকেই দেশ বিদেশের বহু খ্যাতনামা শিল্পী, সাহিত্যিক এবং সংস্কৃতির গুণীজনরা ত্রিপুরায় এসেছিলেন। ত্রিপুরার রাজ পরিবারের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিবিড় সম্পর্ক সাহিত্যের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ত্রিপুরায় ৭ বার এসেছিলেন। ত্রিপুরাকে নিয়ে তাঁর কালজয়ী সাহিত্য আজও আমাদের সম্পদ। রবি ঠাকুর ছাড়াও বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট ঔপন্যাসিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ সাহিত্য সংস্কৃতি জগতের নানা দিকপাল ব্যক্তিত্ব ত্রিপুরায় এসেছিলেন। তিনি বলেন, এই ধরনের সাহিত্য উৎসব আগামীদিনে রাজ্যের সাহিত্য ও সংস্কৃতির পরিমন্ডলকে প্রসারিত করবে। আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে তিনি সকল ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

তিনদিনের সাহিত্য উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ভারতের প্রথম মহাকাশচারী উইং কমান্ডার রাকেশ শর্মা। মঞ্চে অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে ছিলেন ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য পদ্মশ্রী ড. অরুণোদয় সাহা, বিশিষ্ট ঢাক বাদ্যকর পদ্মশ্রী গোকুল চন্দ্র দাস, বিশিষ্ট সাহিত্যিক পদ্মশ্রী ড. রবি কান্নান, আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার বিজয়ী গীতাঞ্জলি শ্রী, রাজ্যের বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক বিকচ চৌধুরী, টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. রতন সাহা, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক রূপক সাহা এবং উড়ানের সভাপতি ড. সুমন্ত চক্রবর্তী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডা. রণবীর রায়। মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য অতিথিগণ ক্যানভাসে নিজের মাতৃভাষায় প্রিয় শব্দ লেখে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। সাহিত্য উৎসব উপলক্ষ্যে একটি স্মরণিকারও প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য অতিথিবর্গ। এছাড়াও ভার্চুয়াল মুডে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বার্তা প্রদান করেন তেলেঙ্গানা রাজ্যের রাজ্যপাল যীষ্ণু দেববর্মা এবং বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট লেখক ও সাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *