মুম্বাই, ২২ জানুয়ারি : পুষ্পক এক্সপ্রেসে আগুন লাগার গুজবে ট্রেন থামিয়ে কয়েকজন যাত্রী ঝাঁপিয়ে পড়েন। ওই সময় পাশের রেল লাইনে কর্ণাটক এক্সপ্রেস কয়েকজন যাত্রীকে চাপা দিয়েছে। তাতে, ১২ জনের মৃত্যু এবং প্রায় ৪০ জন আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
মহারাষ্ট্রের জলগাঁও জেলায় বুধবার বিকেল ৪:৪২ মিনিটে একটি বড় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। পচোরা স্টেশনের কাছাকাছি মাহেজি ও পারধাদে অঞ্চলের মধ্যে পুষ্পক এক্সপ্রেসে আগুন লাগার গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এই সময় কোনও যাত্রী চেন টেনে ধরেন। ট্রেন থামে এবং আতঙ্কিত যাত্রীরা ট্রেন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েন। একই সময়ে অন্য রেল লাইন দিয়ে আসা কর্ণাটক এক্সপ্রেস কয়েকজন যাত্রীকে চাপা দেয়।
জলগাঁও এসপি ১১ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছেন। তবে, বিশেষ পুলিশ মহা-নির্দেশক দত্তাত্রয় করালে জানান, ১২টি মৃতদেহ সিভিল হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে। প্রায় ৪০ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। ভুসাওয়াল বিভাগীয় সেন্ট্রাল রেলের আধিকারিক সূত্র জানিয়েছেন, যেখানে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে সেখানে রেল লাইনে তীক্ষ্ণ বাঁক ছিল। এর ফলে অন্য রেল লাইনের যাত্রীরা ট্রেন আসার সময় বুঝতে পারেনি। তাই কর্ণাটক এক্সপ্রেসে এত বেশি সংখ্যক মানুষ চাপা পড়েন।
ট্রেন নম্বর ১২৬২৭ কর্ণাটক এক্সপ্রেস বেঙ্গালুরু থেকে নতুন দিল্লি যাচ্ছিল। আর পুষ্পক এক্সপ্রেস (১২৫৩৩) লখনউ থেকে মুম্বাই যাচ্ছিল। রেলের এক সিনিয়র আধিকারিক জানান, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী পুষ্পক এক্সপ্রেসের এক কোচের ভেতরে ‘হট এক্সল’ বা ‘ব্রেক-বাইন্ডিং (জ্যামিং)’ এর কারণে আগুনের উল্কি উঠেছিল এবং কিছু যাত্রী তাতে আতঙ্কিত হয়ে যান। তারা চেন টেনে ধরে এবং তাঁদের মধ্যে কিছু নেমে যান।
উত্তর-পূর্ব রেলওয়ের লখনউ বিভাগীয় রেল ব্যবস্থাপক আদিত্য কুমার জলগাঁও রেল দুর্ঘটনা নিয়ে বলেন, আমরা হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছি। লখনউ জংশনে ইমার্জেন্সি বুথ রয়েছে, সেখান থেকেও মানুষ তথ্য জানতে পারেন। গুজব কিভাবে ছড়াল এবং কি ধরনের গুজব ছিল, তা তদন্তের পরেই জানা যাবে।
ট্রেনে সফরকারী এক যাত্রী জানান, এই ঘটনাটি প্রায় সাড়ে তিন থেকে চারটার মধ্যে ঘটেছিল। ট্রেনে হঠাৎ করে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে আমাদের ট্রেনে আগুন লেগেছে। তার পর কিছু মানুষ ট্রেন থেকে নেমে যান। একই সময় কর্ণাটক এক্সপ্রেস সামনে থেকে আসছিল। ট্রেনটি ৩০ থেকে ৩৫ জন লোককে চাপা দেয়। ঘটনাটিতে বেশ কয়েকজন মানুষ ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং অনেক আহত হন। যখন যাত্রীরা রেল লাইনে ছিলেন, সেই সময় কর্ণাটক এক্সপ্রেস হর্ন বাজায়নি। তিনি বলেন, যদি কর্ণাটক এক্সপ্রেস হর্ন বাজাতো, তাহলে যাত্রীরা সতর্ক হয়ে যেতেন।
সিনিয়র রেলওয়ের আধিকারিক জানান, “প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, পুষ্পক এক্সপ্রেসের একটি কোচে স্পার্ক হয়েছিল। এই স্পার্কটি গরম এক্সল বা ব্রেক-বাইন্ডিংয়ের কারণে হয়েছিল। কিছু যাত্রী আতঙ্কিত হয়ে যান। তারা চেন টেনে ধরে এবং তার পর কিছু মানুষ ট্রেন থেকে নেমে যান। একই সময়ে অন্য রেল লাইনে কর্ণাটক এক্সপ্রেস চলে আসে। সিনিয়র আধিকারিকদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে, তাদের পৌঁছানোর পর আরও তথ্য পাওয়া যাবে।”