রাজ্যের প্রত্যন্ত জনপদগুলিতে পরিদ্রুত পানীয়জল পৌঁছানো সুনিশ্চিত করতে হবে: মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ৮ জানুয়ারি : রাজ্যের প্রত্যন্ত জনপদগুলিতে পরিসুত পানীয়জল পৌঁছানো সুনিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন। পানীয়জল সংক্রান্ত কোনও ধরনের অভিযোগ এলে তা জরুরি ভিত্তিতে নিষ্পত্তির জন্য পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। আজ ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি লেনস্থিত ত্রিপুরা ইনস্টিটিউশন ফর ট্রান্সফরমেশন কার্যালয়ে চিফ মিনিস্টার ওয়ার রুমে জল জীবন মিশন রূপায়ণে রাজ্যের অগ্রগতি নিয়ে অনুষ্ঠিত পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।

পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয়ে পানীয়জল সরবরাহ প্রকল্পগুলি চালু করার ক্ষেত্রে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের সম্ভাব্য দিকগুলি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তর এবং বিদ্যুৎ দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় বজায় রাখা প্রয়োজন। পানীয়জল প্রকল্পগুলির রক্ষণাবেক্ষণ ও সারাইয়ের ক্ষেত্রে দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির সাথে সমন্বয় রেখে কাজ করার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, জল অপচয় রোধে জনসচেতনতার উপরও বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। আয়রন রিম্যুভাল প্ল্যান্ট বসানোর পাশাপাশি তার রক্ষণাবেক্ষণের উপরও তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।

পর্যালোচনা সভায় পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং জল জীবন মিশন রূপায়ণে রাজ্যের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন। তিনি জানান, জল জীবন মিশন চালু হওয়ার পূর্বে রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় ২৪ হাজার ৫০২টি পরিবারে নলবাহিত পানীয়জলের সংযোগ ছিল। শতাংশের নিরিখে তা ছিল ৩.২৬ শতাংশ। জল জীবন মিশন চালু হওয়ার পর থেকে রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার ৬ লক্ষ ১২ হাজার ১৯২টি পরিবারে নলবাহিত পানীয়জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শতাংশের নিরিখে তা ৮১.৫৪ শতাংশ। জল জীবন মিশন রূপায়ণে ত্রিপুরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুরস্কৃত হয়েছে। পঞ্চম ন্যাশনাল ওয়াটার অ্যাওয়ার্ড ২০২৩-এর উত্তর পূর্ব জোনের সেরা জেলা ক্যাটাগরিতে ধলাই জেলা সেরা জেলার শিরোপা পেয়েছে।

পর্যালোচনা সভায় পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার রাজীব মজুমদার সচিত্র প্রতিবেদনের মাধ্যমে জল জীবন মিশন রূপায়ণে রাজ্যের সাফল্য, অগ্রগতি এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। তিনি জানান, জল জীবন মিশনে রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার ৬ লক্ষ ১২ হাজার ১৯২টি পরিবারে নলবাহিত পানীয়জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এজন্য ২৮১৩টি ডিপ টিউবওয়েল খনন করা হয়েছে। চালু করা হয়েছে ২৩৫৪টি ডিপটিউবওয়েল। তাছাড়াও ৭১৮৪টি স্মল বোর ডিপটিউবওয়েল চালু, ২৯৬টি ইনোভেটিভ স্কিম, ৪টি সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট এবং ৯০৪টি আয়রন রিমুভাল প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে। তিনি জানান, লেফুঙ্গা এবং মোহনপুর ব্লক ১০০ শতাংশ নলবাহিত পানীয়জলের সংযোগের আওতায় এসেছে। রাজ্যের বিদ্যালয় এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে নলবাহিত পানীয়জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার বর্তমান অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি জানান, রাজ্যে নল জল মিত্র কর্মসূচিতে ১৫৭ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পরিসুত পানীয়জল সরবরাহে রাজ্যে এনএবিএল স্বীকৃত ২১টি ওয়াটার টেস্টিং ল্যাবরেটরি রয়েছে। সভায় এছাড়াও পানীয়জল সরবরাহে ইনোভেটিভ প্রকল্প নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সভায় মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী, পঞ্চায়েত দপ্তরের অধিকর্তা প্রসূন দে, ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের জেনারেল ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার স্বপন দেববর্মা, পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের ৪টি সার্কেলের সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ারগণ, ট্রেডার প্রতিনিধি, ওয়াটার কোয়ালিটি বিশেষজ্ঞ, প্রাক্তন অধ্যাপক অরুণাভ মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *