ঐতিহ্যের বাহক গাইল এখনো তৈরি হয় কল্যাণপুরে

কল্যাণপুর, ২৯ ডিসেম্বর : আধুনিক যান্ত্রিক যুগেও ঐতিহ্যবাহী কাঠের তৈরি গাইলের চাহিদা রয়েছে। বিষয়টা অবাক করলেও সত্যি। রাজ্যের কিছু অঞ্চলে এখনো তৈরি হচ্ছে গাইল। এর প্রমাণ পাওয়া যায় খোয়াই জেলার কল্যাণপুরের প্রত্যন্ত রজনী সরদার পাড়া এডিসি ভিলেজের গয়াং ফাং এলাকায়।

বাঙালিরা বরাবরই ভোজন রসিক। যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন পার্বণে ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরি করে তা সকলের সাথে উপভোগ করা বাঙালি জাতির চিরাচরিত বৈশিষ্ট্য। এক কথায় বাঙালিদের ভোজন এবং চিরাচরিত সংস্কৃতি এক অপরের সাথে যেন অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িত। বাঙালিদের মধ্যে শীতের দিনের ভোজনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জনপ্রিয় জল পিঠে পুলি। আর এই পিঠে পুলি তৈরি করার ক্ষেত্রে চালের গুড়ো অত্যাবশ্যক উপাদান।

প্রসঙ্গত, প্রাচীনকাল থেকেই চালের গুঁড়ো তৈরি করার জন্য কাঠের তৈরি গাইল অন্যতম মাধ্যম ছিল। যদিও কালের বিবর্তনে বিভিন্ন উন্নত যন্ত্রের আবিষ্কার ধীরে ধীরে এই গাইলের আধিপত্যকে খর্ব করছে। কিন্তু তবুও কিছু অঞ্চলে আধুনিক সভ্যতার যুগেও একেবারে হারিয়ে যায়নি কাঠের তৈরি গাইল। এরকমই ছবি ভেসে উঠলো খোয়াই জেলার কল্যাণপুরের প্রত্যন্ত রজনী সরদার পাড়া এডিসি ভিলেজের গয়াং ফাং এলাকাতে।

গয়াং ফাং এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, জনৈক কর্মব্যস্ত জনজাতি প্রবীণ খুব মনোযোগ সহকারে কাঠের গাইল তৈরি করছেন। এই বিষয় নিয়ে ওই ষাটোর্ধ্ব প্রবীণ এই ব্যক্তি দাবি করেছেন পরিমাণে কম হলেও আজকেও গাইলের চাহিদা রয়েছে বিভিন্ন বাজারে।

পাশাপাশি এটাও জানান, নিকটবর্তী কল্যাণপুর সহ বিভিন্ন বাজারে নিয়ে গেলে ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা দরে অনায়াসে বিক্রি করা যায় একটি গাইল।

বলাই বাহুল্য, আধুনিক যন্ত্র সভ্যতার যুগে গাইলের উপস্থিতি , গাইল তৈরির প্রতি সহানুভূতিশীলতা সত্যিই প্রমাণ করে আমাদের সমাজ বেশ বলিষ্ঠ ভাবেই চিরাচরিত সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে বহন করতে জানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *