উত্তরপূর্বাঞ্চলের বিকাশে কেন্দ্রীয় সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে: কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রী

আগরতলা, ২৮ ডিসেম্বর: রাজ্যে ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার (এফসিআই) একটি রিজিওনাল অফিস স্থাপনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় খাদ্য, গণবন্টন, ভোক্ত বিষয়ক এবং পুনর্নবীকরণ শক্তি মন্ত্রকের মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী সম্মতি দিয়েছেন। আজ সচিবালয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহার উপস্থিতিতে এক পর্যালোচনা সভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রীযোশী রাজ্যের দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের এই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গীর কথা জানান।

পর্যালোচনা সভায় কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ, খাদ্য জনসংভরণ ও ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, মুখ্যসচিব জেকে সিনহা, মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের উচ্চ পর্যায়ের আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন। আগরতলায় এফসিআই-এর রিজিওনাল অফিস স্থাপনের জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় জমি বরাদ্দ করা হবে এবং এর জন্য একটি প্রকল্প কেন্দ্রীয় মন্ত্রকে পাঠানো হবে। পর্যালোচনা সভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রীযোশী রাজ্যের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম সম্পর্কে অবহিত হন এবং বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য প্রকল্পের সফল রূপায়নের জন্য তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। পর্যালোচনা সভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, উত্তরপূর্বাঞ্চলের বিকাশে কেন্দ্রীয় সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে। উত্তরপূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে কাজ করছেন তা গত ৭৫ বছরে হয় নি। রাজ্যের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দপ্তরের যে সমস্ত বিষয় তুলে ধরা হয়েছে সেইসব বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের সাথে কথা বলবেন বলে জানান। পর্যালোচনা সভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ত্রিপুরায় মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে যে উন্নয়নের কাজচলছে তার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাক্ট ইষ্ট পলিসির ফলে উত্তর-পূর্বাঞ্চল আজ উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে চলছে। এই প্রসঙ্গে তিনি সম্প্রতি রাজ্যে অনুষ্ঠিত উত্তর পূর্বাঞ্চল পর্ষদের ৭২ তম প্ল্যানারি সেশনের আয়োজন এবং এর ইতিবাচক দিকগুলির কথা উল্লেখ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে পর্যটন, কৃষি ও উদ্যান সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটছে। এরফলে রাজ্যে মাথা পিছু গড় আয় আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি উত্তর পূর্বাঞ্চল পর্ষদের ৭২তম প্ল্যানারি সেশনে অংশ গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যের উন্নয়ন সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুবিধাভোগীদের সাথে আন্তরিকতার সাথে সরাসরি কথা বলেন ও তাদের বিষয়ে খোঁজ খবরও নিয়েছেন। এজন্য মুখ্যমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান। রাজ্য সফরের জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশীকে তিনি অভিনন্দন জানিয়েছেন।

পর্যালোচনা সভায় স্বাস্থ্য, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে এবং গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের সচিব সন্দীপ আর রাঠোর সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচির চিত্র তুলে ধরেন। পর্যালোচনা সভায় নগর উন্নয়ন ও জল সম্পদ দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং, তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের সচিব তাপস রায়, মুখ্য বন সংরক্ষক চৈতন্য মূর্তি, প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের অধিকর্তা, মৎস্য দপ্তরের অধিকর্তা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পের উন্নয়নের চিত্র সচিত্র প্রতিবেদনের মাধ্যমে তুলে ধরেন। পর্যালোচনা সভায় খাদ্য দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার রাজ্যের খাদ্যগুদাম সমূহের সংস্কার সহ বিভিন্ন বিষয় সমূহ নিয়ে তথ্য ভিত্তিক প্রতিবেদন তুলে ধরেন। সভায় রাজ্যের গণবণ্টন ব্যবস্থা, প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা এবং ভোক্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। পুনর্নবীকরণ ও বিকল্প শক্তি দপ্তরের কাজকর্মের সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরেন দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং। তাছাড়াও কৃষি দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায় কৃষির উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্পের রূপায়ণ এবং সাফল্যের দিক সভায় উপস্থাপন করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *