নয়াদিল্লি, ২১ ডিসেম্বর : কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র এবং সমবায় মন্ত্রী অমিত শাহ আজ ত্রিপুরার আগরতলায় নর্থ ইস্টার্ন স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার (এনই-এসএসি) সোসাইটির দ্বাদশ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। কেন্দ্রীয় উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য এম সিন্ধিয়া, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহা, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং, অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু, সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং, কেন্দ্রীয় উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজূমদার, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহন, মহাকাশ দফতরের সচিব ডঃ এস সোমনাথ এবং গোয়েন্দা ব্যুরোর অধিকর্তা তপন ডেকা, কেন্দ্রীয় সরকার এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য সরকারগুলির উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্র এবং সমবায় মন্ত্রী অমিত শাহ তাঁর ভাষণে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারতের মহাকাশ ক্ষেত্র গত ১০ বছরে বিপুল অগ্রগতি সাধন করেছে। তিনি বলেন, এনই-এসএসি সোসাইটি প্রতিষ্ঠার ২৫বছর পর এই সোসাইটির কাজের ইতিবাচক দিকগুলি এখন সহজেই দৃশ্যমান। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে এনইএসএসি সোসাইটির কাজের পরিধি আরও বাড়ানো উচিত এবং এর জন্য রাজ্য সরকারগুলিকেও উদ্যোগ নিতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এনইএসএসি সোসাইটিকে উত্তর-পূর্বের সমস্ত রাজ্য থেকে ১০০ জন করে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীকে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরোর) সদর দফতরে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যাতে তাঁদের মধ্যে মহাকাশ ও সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ গড়ে উঠতে পারে। তিনি উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রককে এই প্রকল্পের জন্য ৬০ শতাংশ অবদান রাখার আহ্বান জানান। শ্রী শাহ উত্তর-পূর্বের রাজ্য সরকারগুলিকে রাজ্যের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে মহাকাশ প্রযুক্তি সম্পর্কিত নতুন কোর্স শুরু করার আহ্বান জানান।
অমিত শাহ বলেন, এনইএসএসি-র সহায়তায় এখনও পর্যন্ত ২০ টি জলপথ তৈরি করা হয়েছে এবং সোসাইটিকে আরও জলপথ নির্মাণের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে হবে। তিনি বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে খনিজ, তেল ও কয়লা খাদান খোঁজার জন্য ব্যাপকতাপূর্ণ মানচিত্র তৈরির প্রয়োজন রয়েছে। এই খনিজগুলির থেকে প্রাপ্ত রয়্যালটি থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলি আর্থিকভাবে উপকৃত হবে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এবং সমবায় মন্ত্রী বলেছেন যে ভারত-মায়ানমার সীমান্তে, বিশেষত নাগাল্যান্ড, মিজোরাম এবং মণিপুরে মানুষের জনতাত্ত্বিক তথ্য ম্যাপ করা উচিত যাতে তা সীমান্তে বেড়া নির্মাণে সহায়তা করতে পারে এবং অনুপ্রবেশ বন্ধ করবে। তিনি বলেন, এর জন্য সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে ব্যাপক সমীক্ষা করার প্রয়োজন রয়েছে। শ্রী অমিত শাহ বলেন, এনইএসএসি সোসাইটির উচিত মহাকাশ বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে বন এলাকার উন্নয়নের দিকেও মনোনিবেশ করা। তিনি বলেন, এর জন্য পুরনো মানচিত্রের সঙ্গে সাম্প্রতিকতম মানচিত্রের তুলনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত এবং যেখানে সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে রাজ্য সরকারগুলির সহযোগিতায় গাছ লাগানোর চেষ্টা করা উচিত। একইভাবে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোসাইটিকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির বন্যার মানচিত্র তৈরি করতে বলেছেন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী প্রশাসনে মহাকাশ প্রযুক্তির যথাযথ ও ইতিবাচক ব্যবহারের জন্য এনইএসএসি সোসাইটির প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন এবং আগামী সময়ে উত্তর-পূর্বের মতো কঠিন ভৌগলিক অঞ্চলের উন্নয়নে এর ব্যাপক ব্যবহারের উপর জোর দিয়েছেন। শ্রী শাহ আরও বলেন, এনইএসএসি সোসাইটির রাজস্ব মডেলের বিকাশ করার দিকেও মনোনিবেশ করা উচিত।