১৮-১৯ ডিসেম্বর স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে রাজ্যভিত্তিক খেলো ত্রিপুরা প্যারা গেমস অনুষ্ঠিত হবে: ক্রীড়ামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ ডিসেম্বর:
রাজ্যভিত্তিক ‘খেলো ত্রিপুরা প্যারা গেমস’ আগামী ১৮-১৯ ডিসেম্বর স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে। আজ সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায় এ সংবাদ জানান। ক্রীড়ামন্ত্রী জানান, দিব্যাঙ্গজন দিবস, ২০২৪ উদযাপনের অঙ্গ হিসাবে ‘খেলো ত্রিপুরা প্যারা গেমস-২০২৪’এর আয়োজন একটি অনন্য উদ্যোগ। দিব্যাঙ্গজনদের খেলাধুলায় উৎসাহিত করতে সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তর এবং যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই প্যারা গেমসে রাজ্যের সব জেলা থেকে প্রতিযোগীরা অংশ নেবেন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার আইন, ২০১৬ অনুসারে খেলাধুলায় দিব্যাঙ্গজন ব্যক্তিদের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে রাজ্য সরকারের উপর দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয়েছে। খেলো ত্রিপুরা প্যারা গেমস, ২০২৪ এর আয়োজনের মাধ্যমে ত্রিপুরা এক্ষেত্রে এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করতে চলেছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে ক্রীড়ামন্ত্রী জানান, খেলো ত্রিপুরা প্যারা গেমসে রাজ্যের আটটি জেলা থেকে প্রায় ৩৪৩ জন দিব্যাঙ্গজন খেলোয়াড় অংশ নেবেন। এই গেমসে ১৪টি ইভেন্টে খেলার আয়োজন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে দৃষ্টিহীন দিব্যাঙ্গজনদের নিয়ে ক্রিকেট ম্যাচ। এজন্য দুটি দল গঠন করা হয়েছে। একটি দল হচ্ছে উত্তরাঞ্চল দল (উত্তর ত্রিপুরা, উনকোটি, ধলাই, খোয়াই জেলা নিয়ে) অন্য দলটি হল দক্ষিণাঞ্চল দল (পশ্চিম ত্রিপুরা, সিপাহিজলা, গোমতি, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলা নিয়ে)। এছাড়াও থাকবে ফুটবল (উত্তরাঞ্চল দল বনাম দক্ষিণাঞ্চল দল), হুইল চেয়ার দৌড় (ছেলে ও মেয়ে), শট পুট (ছেলে ও মেয়ে), দাবা (ছেলে ও মেয়ে), ৫০ মিটার দৌড় (ছেলে ও মেয়ে), লং জাম্প (ছেলে ও মেয়ে), ক্যারাম (ছেলে ও মেয়ে), টাগ-অফ-ওয়ার (ছেলে ও মেয়ে), রিং গ্রো (ছেলে ও মেয়ে), মিউজিক্যাল বল (পুরুষ), মিউজিক্যাল চেয়ার (মহিলা), স্ট্যান্ডিং বোর্ড জাম্প (ছেলে ও মেয়ে), বুচি খেলা (পুরুষ ও মহিলা)। ক্রীড়ামন্ত্রী জানান, খেলো ত্রিপুরা প্যারা গেমস উপলক্ষ্যে স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে ৫০টি প্রদর্শনী স্টল খোলা হবে। তাতে বিভিন্ন দপ্তরের উন্নয়নমূলক কাজের তথ্য প্রদর্শিত হবে। সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের মাধ্যমে দিব্যঙ্গজনদের মধ্যে হুইল চেয়ার সহ বিভিন্ন চলন সামগ্রী প্রদান করা হবে। এছাড়া দিব্যঙ্গজনদের চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের জন্য সেখানে চিকিৎসা শিবিরও খোলা হবে।

সাংবাদিক সম্মেলনে ক্রীড়ামন্ত্রী আরও জানান, যোগ্যতা সত্বেও যেসকল দিব্যাঙ্গজন ব্যক্তি (৬০ শতাংশ এবং তার বেশি) এখনো সামাজিক ভাতা পাননি তাদের সামাজিক ভাতা দেওয়ার জন্য সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তর বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এজন্য প্রতিযোগিতা চলাকালীন তৎক্ষনাৎ সামাজিক ভাতা দেওয়ার জন্য স্টল খোলা হবে। অনুষ্ঠানমঞ্চে এরকম উপযুক্ত ২ জনকে ভাতা প্রদান করা হবে। নতুন ২,৭৭৯ জনকে এরকম ভাতা প্রদান করা হবে বলে ক্রীড়ামন্ত্রী জানান। তিনি জানান, খেলো ত্রিপুরা প্যারা গেমসের অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতকার্য মেধাবী পাঁচজন দিব্যাঙ্গজন শিক্ষার্থীকে ২৪ হাজার টাকা করে এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতকার্য পাঁচজন মেধাবী দিব্যাঙ্গজন শিক্ষার্থীকে ৫৪ হাজার টাকা করে মুখ্যমন্ত্রী দিব্যাঙ্গজন মেধাবী পুরস্কার দেওয়া হবে। এছাড়া অনুষ্ঠানে দিব্যাঙ্গজনদের ইউ ডি আই ডি কার্ড দেয়া হবে, যাতে একটি স্বতন্ত্র নম্বর থাকবে। যা দিয়ে সেই দিব্যাঙ্গজন ব্যক্তি ভারতের যে কোনো জায়গায় দিব্যাঙ্গজনদের জন্য প্রদত্ত সুবিধাগুলি পেতে পারে। এছাড়াও রাজ্যের সমস্ত দিব্যাঙ্গজনদের ব্যাপক কল্যাণ ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন নিতি করার জন্য এই গেমসের অনুষ্ঠানে দিব্যাঙ্গজনদের ক্ষমতায়নের জন্য ত্রিপুরা রাজ্য নীতি, ২০২৪ প্রকাশ করা হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের অধিকর্তা সত্যব্রত নাথ এবং সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের অতিরিক্ত অধিকর্তা এল রাখল উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *