কল্যাণপুর, ১০ ডিসেম্বর : দক্ষিণ ঘিলাতলীর ছনখলা এলাকায় সোমবার রাতের অন্ধকারে দুটি বন্য দাঁতাল হাতি তাণ্ডব চালায়। হাতিগুলি স্থানীয় লোকালয়ে প্রবেশ করে কয়েকটি কলাগাছ খেয়ে ফেলে। যদিও বাড়িঘর বা অন্যান্য স্থাপনার বড় কোনো ক্ষতি হয়নি, তবে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাত গভীর হওয়ার পর হাতি দুটি লোকালয়ে প্রবেশ করে। কলাগাছ ও আশপাশের কিছু ফসল খেয়ে নষ্ট করার পর তারা বনাঞ্চলের দিকে ফিরে যায়। বনদপ্তরের কর্মকর্তারা এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকতে বলেছেন এবং হাতি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, এই ধরনের ঘটনায় তারা উদ্বিগ্ন, কারণ হাতির তাণ্ডব লোকালয়ের জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করছে। বনদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা বনদপ্তরের সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, হাতির চলাচলের এলাকাগুলোতে আলো জ্বালানো, শোরগোল করা বা ধোঁয়া সৃষ্টি করার মতো পদ্ধতি অবলম্বন করে সতর্কতা বজায় রাখতে হবে। হাতি লোকালয়ে প্রবেশ করলে বনদপ্তরে তাৎক্ষণিক খবর দেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বনাঞ্চলের ক্রমাগত সংকোচন এবং খাদ্য সংকটের কারণে হাতিগুলি লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বন সংরক্ষণ এবং হাতিদের খাদ্যের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার উপর জোর দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে দক্ষিণ ঘিলাতলীর ছনখলা এলাকায় বন্য হাতির উপদ্রব কৃষকদের জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই এলাকার অধিকাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে বন্য হাতি ফসলি জমিতে হানা দিয়ে ব্যাপক ক্ষতি করতে পারে। এতে কৃষকরা আর্থিক সংকটে পড়বে এবং ফসল উৎপাদনেও প্রভাব পড়বে। বন্য হাতির দল ধান, শাকসবজি এবং অন্যান্য ফসল ধ্বংস করছে, যা এলাকার মানুষের জীবনযাত্রায় বড় ধাক্কা দিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হাতির এই আচরণ তাদের বাসস্থান সংকোচনের কারণে হতে পারে, কারণ বনাঞ্চল ধ্বংস এবং প্রাকৃতিক সম্পদ কমে যাওয়ায় তারা খাবারের সন্ধানে গ্রামে ঢুকে পড়ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই সমস্যা সমাধানে কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। স্থানীয় কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পাশাপাশি হাতি তাড়ানোর জন্য আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও মানব-হাতি সংঘাতের সমাধানে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করাও অত্যন্ত জরুরি।।