জাতীয় পঞ্চায়েত পুরস্কারে ব্যাপক সাফল্য অর্জন ত্রিপুরার, খুশি মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ৬ ডিসেম্বর: জাতীয় পঞ্চায়েত পুরস্কারে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে ত্রিপুরা। মোট সাতটি জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। আগামী ১১ ডিসেম্বর দিল্লীর বিজ্ঞান ভবনে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারগুলি তুলে দেবেন। আজ সামাজিক মাধ্যমে এমনটাই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক (ডা:) মানিক সাহা।

এদিন সামাজিক মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সারা দেশের প্রায় আড়াই লাখ পঞ্চায়েতের সাথে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রথমবারের মতো জাতীয় পঞ্চায়েত পুরস্কারে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে ত্রিপুরা। আমাদের রাজ্য অত্যন্ত গর্বের সাথে এই বছর মোট সাতটি জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। আগামী ১১ ডিসেম্বর দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে দেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি পুরস্কারগুলো তুলে দেবেন।

গোমতী জেলা দেশের মধ্যে সেরা জেলা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। এই সম্মান অর্জনের জন্য গোমতী জেলা পাবে ৫ কোটি টাকার পুরস্কার। পরিকল্পিত উন্নয়ন, দারিদ্রদ্র্য দূরীকরণ ও সামাজিক পরিকাঠামো উন্নত করার ক্ষেত্রে গোমতী জেলা অন্যদের ছাপিয়ে গেছে।অমরপুর আরডি ব্লক জাতীয় স্তরে দ্বিতীয় সেরা ব্লকের শিরোপা অর্জন করেছে। ব্লকের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, গ্রামীণ সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং জনকল্যাণমূলক প্রকল্প রূপায়ণে তাদের দক্ষতা এই সাফল্য অর্জনে সহায়ক হয়েছে। পুরস্কার মূল্য হিসেবে তারা পাবে ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা।মহিলা ক্ষমতায়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করে রূপাইঘড়ি ব্লকের মনুবনকুল ভিলেজ কমিটি দেশের সেরা মহিলা বান্ধব পঞ্চায়েত হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে। নারীদের জন্য কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে তাদের প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়। এ জন্য তারা পাবে ১ কোটি টাকার পুরস্কার।

গ্রামের বিদ্যুৎ ও শক্তি ব্যবস্থাপনায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে অমরপুর আরডি ব্লকের থাকছড়া গ্রাম পঞ্চায়েত। তারা সারা দেশের মধ্যে গ্রাম উর্যা ক্যাটাগরিতে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে এবং পাবে ৭৫ লক্ষ টাকার পুরস্কার। কুমারঘাট ব্লকের বেতছড়া গ্রাম পঞ্চায়েত দারিদ্র্য দূরীকরণে অসাধারণ অবদান রেখেছে। তাদের উদ্ভাবনী প্রকল্প এবং সমবায়ভিত্তিক উদ্যোগগুলির মাধ্যমে এই সাফল্য এসেছে। পুরস্কার মূল্য হিসেবে তারা পাবে ৫০ লক্ষ টাকা।

অমরপুর ব্লকের রাজকাও ভিলেজ কমিটি শিশুদের জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তারা সারা দেশের মধ্যে তৃতীয় স্থান অর্জন করে ৫০ লক্ষ টাকার পুরস্কার লাভ করেছে।জলসম্পদ ব্যবস্থাপনায় বিশেষ দক্ষতা প্রদর্শন করেছে অমরপুর ব্লকের দেববাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত। গ্রামীণ অঞ্চলে পানীয় জল সরবরাহ ও জল সংরক্ষণ প্রকল্পে তাদের সাফল্যের জন্য তারা তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে এবং পুরস্কার মূল্য হিসেবে পেয়েছে ৫০ লক্ষ টাকা।

ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন জেলা, ব্লক ও পঞ্চায়েত মিলিয়ে এই বছর মোট ১০ কোটি টাকার পুরস্কার জিতেছে। এই অর্থ আরও উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহৃত হবে, যা রাজ্যের পঞ্চায়েতি ব্যবস্থাকে আরও সমৃদ্ধ করবে।পঞ্চায়েত দস্তুর থেকে প্রণীত বিভিন্ন নির্দেশিকা এবং তার কার্যকর বাস্তবায়নই এই সাফল্যের মূলে রয়েছে। জেলা, ব্লক এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের সুষ্ঠু সমন্বয় এবং দক্ষ নেতৃত্ব এই অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থার এই সাফল্য রাজ্যের সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে এক নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। প্রত্যাশা করা যায় যে অন্যান্য জেলা ও ব্লকগুলিও একইভাবে সাফল্যের পথে আগামীদিনে অগ্রসর হবে। এই সাফল্য ত্রিপুরার উন্নয়নের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।