আগরতলা, ১৯ সেপ্টেম্বর : শৈশবকাল থেকেই শিশুরা সুস্থ ও সবলভাবে বেড়ে উঠলে সমাজ, রাজ্য ও দেশ শক্তিশালী হয়ে উঠবে। কারণ শিশুরাই দেশের ভবিষ্যৎ। রাজ্যের শিশুরা শৈশবকাল থেকেই যাতে স্বাস্থ্যবান হয়, অপুষ্টি, রক্তাল্পতায় না ভোগে সেই লক্ষ্যে সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তর বহুমুখী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষামন্ত্রী টিংকু রায় আজ আগরতলা টাউনহলে আয়োজিত রাজ্যভিত্তিক সপ্তম রাষ্ট্রীয় পোষণ মাহ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বলেন।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৮ সালের ৮ মার্চ এই পোষণ মাহ অভিযান (জাতীয় পুষ্টি মিশন)-এর সূচনা করেন। বর্তমানে প্রতিবছর ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় পোষণ মাহ পালন করা হয়। এবছর রাষ্ট্রীয় পোষণ মাহ-এর মূল থিম হলো রক্তাল্পতা, বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ, পরিপূরক খাদ্য খাওয়ানো, পোষণ ভি পড়াই ভি এবং সামগ্রিক পুষ্টি।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষামন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, শিশুদের বিকাশের প্রাথমিক স্থান হলো অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিকে সবদিক দিয়ে উন্নত করতে পারলে শিশুদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে। রাজ্যে প্রায় ১০ হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। এতে প্রায় ৪ লক্ষ শিশু রয়েছে। প্রতিটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে লেখাপড়া, পানীয়জল, শৌচালয়, খেলাধুলা, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্যে ৩টি জাতীয় এবং ৩০টি রাজ্যস্তরের সামাজিক ভাতা প্রকল্পে প্রায় ৪ লক্ষ সুবিধাভোগীকে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। রাজ্যে ৩০ হাজার দিব্যাঙ্গজনকে ইউডিআইডি কার্ড দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেন সংকল্প নিলেই সিদ্ধিলাভ করা যায়। এই সংকল্প গুণেই কাশ্মীরের দিব্যাঙ্গ বোন শীতল দেবী প্যারা এশিয়ান গেমসে সোনা, রূপা এবং এবছরের প্যারিস অলিম্পিক গেমসে ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেছেন। ভারত সরকার তাকে পদদ্মশ্রী পদকে ভূষিত করেছে। অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণমন্ত্রী টিংকু রায় এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক রাজ্যে যে ১০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র সংস্কার করে নতুন আঙ্গিকে গড়ে তুলেছে তার ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে আগরতলার পুরনিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার বলেন, সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তর কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প গর্ভবতী মহিলা ও শিশুদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। আজ নারীরা আগের চাইতে অনেক সুরক্ষিত। এছাড়া বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন ঝর্ণা দেববর্মা ও ত্রিপুরা শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন জয়ন্তী দেববর্মা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা তপন কুমার দাস। অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণমন্ত্রী সহ
অতিথিগণ ৫ জন গর্ভবতী মহিলা ও ৫ জন শিশুর হাতে পোষণ কিট তুলে দেন। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রকের তৈরি পোষণ মাহ-এর ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিগণ দপ্তরের শিশুর ওজন ও বৃদ্ধি পরিমাপক কেন্দ্র, স্থানীয় খাদ্য সামগ্রীর প্রদর্শনী ও রক্তাল্পতা সনাক্তকরণ ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের অতিরিক্ত অধিকর্তা এল রাঞ্চল।