নয়াদিল্লি, ১৯ জুলাই : কেন্দ্রীয় যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী ডঃ মানসুখ মান্ডভিয়া আজ নতুন দিল্লির জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামে কীর্তি (খেলো ইন্ডিয়া রাইজিং ট্যালেন্ট আইডেন্টিফিকেশন) কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ের সূচনা করেছেন। সংসদ সদস্য মনোজ তিওয়ারি এবং কমলজিৎ সেহরাওয়াত, বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মন্ত্রকের উচ্চপদস্থ আধিকারিক এবং এম. সি. ডি স্কুলের শিশুরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ডঃ মান্ডভিয়া বলেন, “ভারত বৈচিত্র্য ও সম্ভাবনায় পরিপূর্ণ। ভারতে বুদ্ধিবৃত্তি, জনবল বা প্রতিভার অভাব কখনও হয়নি। শুধু শহরগুলিই নয়, উত্তর-পূর্ব, উপকূলীয়, হিমালয় এবং উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলগুলির মতো আমাদের দূরবর্তী অঞ্চলগুলিতেও একজন মানসম্পন্ন ক্রীড়াবিদ থাকতে পারেন। ‘কীর্তি’ কর্মসূচির লক্ষ্য হল এই প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদদের চিহ্নিত করা এবং তাদের দক্ষতা বিকাশ করা।
তিনি বলেন ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বারবার আমাদের জীবনে খেলাধুলার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। ভারতকে বিশ্ব ক্রীড়াক্ষেত্রে পরাশক্তিতে পরিণত করার লক্ষ্যে সরকার প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদদের সর্বান্তঃকরণে সহায়তা করার জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ নিয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অলিম্পিক সহ বিভিন্ন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে আমাদের পদকের প্রাপ্তির সংখ্যা থেকে ক্রীড়া ক্ষেত্রে সরকারের কেন্দ্রীভূত দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন পাওয়া যায়।
ডাঃ মান্ডভিয়া বলেন, আমাদের এই অত্যন্ত কার্যকরী সম্পদের একটি ধারাবাহিক প্রবাহ থাকা দরকার এবং এখানেই ক্রীড়া উৎকর্ষের এক ধাপ, কীর্তি কার্যকর হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হাজার হাজার স্কুল পড়ুয়া শিশুদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ডঃ মান্ডভিয়া বলেন, “তোমাদের মধ্যে অবশ্যই কেউ একজন আগামীদিনের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন থাকবে। আমি এই সত্যটির প্রশংসা করি যে তাঁর বাবা-মাও এখানে এসেছেন এবং তাঁকে খেলাধুলার প্রতি উত্সাহ যুগিয়ে চলেছেন, সমর্থন করছেন। তুমি হয়তো একদিন অলিম্পিকে পদক জিতবে, তখন তুমি ও তোমার বাবা-মা জেএলএন স্টেডিয়ামের এই দিনটির কথা মনে রাখবেন।
ডঃ মান্ডভিয়া আরও বলেন যে, সরকার কীর্তি কর্মসূচির আওতায় ১০০ দিনের মধ্যে ১ লক্ষ উদীয়মান তরুণ ক্রীড়াবিদকে চিহ্নিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, কীর্তি কর্মসূচির আওতায় প্রত্যেককে তাদের ক্রীড়া দক্ষতা বিকাশের সুযোগ দেওয়া হবে, তা সে গ্রামে থাকুক বা শহরে, এবং সে দরিদ্র পটভূমি থেকে আসুক বা অন্য কোথাও।
আজকের অনুষ্ঠানটির মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী প্রতিভা অন্বেষণের সূচনা হলো যা ২০৪৭ সালের মধ্যে অলিম্পিক গেমসে ভারতকে শীর্ষ ৫ দেশের মধ্যে একটি অন্যতম দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে তোলার পদক্ষেপ হিসাবে প্রমাণিত হবে। উল্লেখ্য, এবছর প্যারিস অলিম্পিকে ভারতের প্রতিনিধিত্বকারী ১১৭ জন ক্রীড়াবিদের মধ্যে ২৮ জন খেলো ইন্ডিয়া পরিমন্ডল থেকে উঠে এসেছে। আরো বলা দরকার, কীর্তি-র প্রতিভা সনাক্তকরণ মডেলটি বৈজ্ঞানিক পরিকল্পনার মাধ্যমে রচনা করা হয়েছ, যেখানে তথ্য-প্রযুক্তি সরঞ্জাম এবং বিশ্বব্যাপী সর্বোত্তম অনুশীলনগুলি গ্রহণ করা হয়েছে|
কীর্তি কর্মসূচির লক্ষ্য হল তরুণ উদীয়মান ক্রীড়াবিদদের তাদের দক্ষতার ভিত্তিতে কর্মজীবনের পথ বেছে নেওয়ার দিকনির্দেশনা প্রদান করা। দিল্লিতে, স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া, দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের (এমসিডি) সহযোগিতায় মোট ১২টি জোনে এমসিডি-র ২৫০০০-এরও বেশি ছাত্রছাত্রীর কীর্তি মূল্যায়ন করবে। এই মূল্যায়নগুলি মোট ২৭ দিন ধরে চলতে থাকবে এবং এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে ৫টি প্রধান বিভাগ অর্থাৎ অ্যাথলেটিক্স, ফুটবল, ভলিবল, কাবাডি এবং খো-খো|
২০২২-২৩-এ দিল্লি পুরনিগম তার প্রথম পরীক্ষামূলক প্রকল্পের মাধ্যমে ফুটবল, ভলিবল ইত্যাদির মতো বিভিন্ন খেলা জুড়ে ৬-১০বছর বয়সী এমসিডি শিক্ষার্থীদের জন্য দিল্লি জুড়ে বিভিন্ন ক্রীড়া শিবিরের আয়োজন করে। তৃতীয় পর্যায়ে, কীর্তির আওতায় খেলো ইন্ডিয়া প্রকল্পের ২০টি শাখাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। চলতি বছরের ১২ই মার্চ চণ্ডীগড়ে কীর্তির প্রথম পর্বের সূচনা হয়।

