করিমগঞ্জ (অসম), ২০ এপ্রিল (হি.স.) : মানুষের জনসমর্থন প্রমাণ করে দিয়েছে পাথারকান্দি থেকে ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ভোট লিড নেবে বিজেপি করিমগঞ্জ জেলার অন্তর্গত ইচাবিলে অনুষ্ঠিত বিজয় সংকল্প সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে দাবি করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী তথা ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির স্টার ক্যাম্পেনার ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা। তবে নগাঁও-এর সঙ্গে করিমগঞ্জেও যে বিজেপির জন্য কঠিন লড়াই রয়েছে, ভোটের আগে নিজের মুখেই স্বীকার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ৬৫ শতাংশ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত আসনে বিজেপি যে টেনশনে রয়েছে তা বোঝা গেছে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়।
প্রায় ২০ হাজার বিজেপি কার্যকর্তা ও সমর্থকের উপস্থিতিতে ড. শর্মা বলেন, করিমগঞ্জে এআইইউডিএফ-এর পারুল ফেল, কংগ্রেসের এইচআর চৌধুরীও ফেল। বিপুল ভোটে জয়ী হচ্ছেন কৃপানাথ মালাহ। উদাহরণ দিয়ে বলেন, কেন্দ্র এবং রাজ্যে আগামী ৫০ বছর বিজেপি শাসন করে যাবে। কংগ্রেস বা। এআইইউডিএফকে ভোট দেওয়া মানে নষ্ঠ করা । প্রতি পরিবারকে ৫ কেজি রেশন, বাজার থেকে ৩০০ টাকা কম দামে গ্যাসের সিলিন্ডার প্রদান, আয়ুষ্মান ভারত কার্ডের সঙ্গে ৫ লাখ টাকার বিনামূল্যে চিকিৎসা দিচ্ছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। তাই সবার দরকার মোদী সরকারকে সমর্থন করা।
ড. শর্মা বলেন, দেশের তৃতীয় বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন নরেদ্র মোদী। আর মোদীজিকে প্রধানমন্ত্রী বানাতে কৃপানাথকে বিপুল ভোটে জয়ী করতে হবে।বিরোধীদের সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কংগ্রেস এআইইউডিএফ দলের কোনও কাজ নেই অসমে। পুরানো নোটের মতো অচল দুই দল। দিল্লি বা অসমে কোনও দিন কংগ্রেস এআইইডিএফ সরকার গঠন করবে না, তাই তাদের ভোটের দরকার নেই।
হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, অসমে বিজেপি সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল ১ লাখ বিনামূল্যে চাকরি, আর ৩ বছরে এই প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে অসম সরকার। ভোটের পর আবার নতুন করে ৫০ হাজার চাকরি দেবে রাজ্য। জুলাই মাসে পুলিশের বিভিন্ন পদে ইন্টারভিউ, সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসে থার্ড ফোর্থ গ্রেডের ইন্টারভিউ।
প্রতিশ্রুতি দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা লাভ করতে হলে এখন থেকে সুবিধাভোগীরা নিজে নিজেদের জিও ট্যাগিং করবেন, প্রয়োজন পড়বে না পঞ্চায়েত কর্মীর। তাছাড়া পাথারকান্দির ঘরে ঘরে মহিলাদের প্রদান করা হবে অরুণোদয় প্রকল্প, বাদ যাবে না হিন্দু-মুসলিম-মণিপুরি-চা বাগানের কোনও পরিবার।
হিমন্তবিশ্ব বলেন, দেশে মোদীর গ্যারান্টি আর অসমে মামার ওয়ারেন্টি। মাধ্যমিক-উত্তীর্ণদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রছাত্রীদের কলেজে ভর্তি ফ্রি করে দিয়েছে অসম সরকার, তাছাড়া ছাত্রীদের কলেজে ভর্তি ছাড়া ১০ হাজার টাকা দেবে মামার সরকার । পাশাপাশি বলেন, মহাসড়কের নির্মাণকাজ ২৬-এর আগে শেষ হচ্ছে। ৬ ঘণ্টায় পৌঁছা যাবে গুয়াহাটি। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন হচ্ছে পাথারকান্দিতে। তাছাড়া, বরাকে চালু হচ্ছে মিনি সচিবালয়-এর কাজ। ২৬-এর আগে পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে নির্মাণ। তাই বরাকের মানুষের গুয়াহাটি যাওয়ার খুব একটা প্রয়োজন হবে না। এছাড়া বলেন, ভৈরবী থেকে চলাচল করবে দূরপাল্লার ট্রেন।
সব শেষে বিজয় সংকল্প সমাবেশে পাথারকান্দির বিধায়ককে মন্ত্রীসভায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি উঠলে রসিকতা করে ঘুষের দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে ঘুষের দাবি কোনও নগদ অর্থ নয়, এক লক্ষের ব্যবধানে বিজেপি প্রার্থী জয়ী হলে খুশির খবর থাকবে বলে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিজয় সংকল্প সমাবেশের ভাষণ দিয়েছেন করিমগঞ্জ লোকসভা আসনের বিজেপি প্রার্থী কৃপানাথ মালাহ, পাথারকান্দির বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল, রাতাবাড়ির বিধায়ক বিজয় মালাকার সহ জেলাস্তরের অনেক নেতৃত্ব।