কলকাতা, ২২ মার্চ (হি.স.) : ফের আদালতে মুখ পুড়ল রাজ্য পুলিশ প্রশাসনের ৷ ২০১৯ সালে তিন বিজেপি কর্মীকে খুনের মামলার চার্জশিটে শেখ শাহজাহানের নাম বাদ দেওয়ায়, সিআইডি-কে ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর বেঞ্চ৷
সাক্ষীদের গোপন জবানবন্দিতে ১ নম্বরে নাম থাকা সত্ত্বেও, কেন শেখ শাহজাহানের নাম বাদ? এই প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি৷ ১ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানিতে কেস ডায়রি জমা দিতে বলা হয়েছে৷
২০১৯ সালে সন্দেশখালিতে খুন হন তিন বিজেপি কর্মী প্রদীপ মণ্ডল, দেবদাস মণ্ডল এবং সুকান্ত মণ্ডল৷ যে ঘটনায় শেখ শাহজাহান এবং তাঁর বাহিনীর বিরুদ্ধে দু’টি এফআইআর দায়ের হয়৷ হাইকোর্টের নির্দেশেই সেই মামলার তদন্তভার যায় সিআইডি-র হাতে।
তদন্তে নেমে সাক্ষীদের গোপন জবানবন্দি নেন তদন্তকারী আধিকারিকরা৷ কিন্তু, সিআইডি মামলার চূড়ান্ত চার্জশিট জমা দেওয়ার পর দেখা যায়, সেখানে প্রধান অভিযুক্ত ও সাক্ষীদের বয়ানে সবার উপরে থাকা শেখ শাহজাহানের নাম বাদ গিয়েছে৷ তারপরেই সিবিআই তদন্তের দাবিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী গত ৮ জানুয়ারি একটি মামলা করেছিলেন হাইকোর্টে৷
সেই নিয়ে এদিন আদালতে তলব করা হয়েছিল সিআইডি-র তদন্তকারী আধিকারিককে৷ তাঁকে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত প্রশ্ন করেন, “সাক্ষীর গোপন জবানবন্দিতে ১ নম্বর অভিযুক্তের তালিকায় শেখ শাহজাহানের নাম থাকা সত্ত্বেও শেখ শাহজাহানের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দিলেন কী করে?” জবাবে সিআইডি-র আইও বলেন, “সাক্ষীর জবানবন্দি বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়নি৷”
রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের ওই আধিকারিকের বক্তব্য শুনে ক্ষুব্ধ বিচারপতি বলেন, “আপনি ঠিক করবেন কে বিশ্বাস যোগ্য, আর কে বিশ্বাস যোগ্য নয়? আপনার কোনও সিনিয়রকে ডাকতে হবে দেখছি৷”
উল্লেখ্য, এদিন রাজ্যের আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় শুনানিতে হাজির ছিলেন না৷ তাই অন্য এক আইনজীবী জানান, “চার্জশিট জমা পড়েছে৷ তবে, চার্জ ফ্রেম হয়নি এখনও৷ রাজ্যকে আরও কয়েকদিন সময় দেওয়া হোক কেস ডাইরি হাজির করতে৷” 1 এপ্রিল পরবর্তী শুনানি হবে৷ আগের নির্দেশ অনুযায়ী, নিম্ন আদালতে এই মামলার সমস্ত বিচার আপাতত স্থগিত থাকবে৷ পরের শুনানির দিন ফের কেস ডায়েরি আনার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত৷