মমতার লোকক্ষ্যাপানো মন্তব্যেই সন্দেশখালির ঘটনা, অভিযোগ শুভেন্দুর

কলকাতা, ৫ জানুয়ারি (হি.স.) : দিনের পর দিন আধা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোকক্ষ্যাপানো মন্তব্যের প্রতিক্রিতেই ঘটল সন্দেশখালির ঘটনা। শুক্রবার তৃণমূলনেত্রীর ২ মিনিট ১৯ সেকেন্ডের একটি বক্তৃতার খণ্ডাংশের ভিডিও যুক্ত করে এই মন্তব্য করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

ওই ভিডিওতে তৃণমূলনেত্রীর চার পৃথক বক্তৃতার খণ্ডাংশ পেশ করা হয়েছে। প্রতিটিতেই আধা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে লোকক্ষ্যাপানো মন্তব্য। প্রথমটিতে তিনি সমবেতদের বলছেন, কাল যদি ইডি-সিবিআই আমার বাড়িতে যায় আপনারা কী করবেন? সমবেত আশ্বাস আসে সেই চেষ্টায় বাধা দেওয়া হবে। তৃণমূলনেত্রী প্রশ্ন করেন, মানে রাস্তায় নেমে বাধা দেবেন তো? আবার সমবেত আশ্বাস— “হ্যাঁএএএএ“। তৃণমূলনেত্রী প্রশ্ন করেন, মানে গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করবেন তো? আবার সমবেত আশ্বাস— “হ্যাঁএএএএ“।

তৃণমূলনেত্রী এবার বলেন, আমারটা আমিএকাই লড়ে নেব। কিন্তু আপনাদেরটা আপনাদের লড়ে নিতে হবে তো? আবার সমবেত আশ্বাস— “হ্যাঁএএএএ“।
বাকি তিনটি বক্তৃতার চরিত্র একই রকম। শুভেন্দুবাবু এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “আপনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইডি আধিকারিক এবং সিআরপিএফ জওয়ানদের উপর আজকের ভয়াবহ হামলার মূল কারণ। সাংবিধানিক নিয়ম মেনে চলার পরিবর্তে, ফেডারেল কাঠামোকে সম্মান করার এবং বিচার বিভাগীয় নির্দেশনা মেনে চলার পরিবর্তে, আপনি বারবার আপনার অরাজক দলের কর্মীদের উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন যারা কম রাজনৈতিক এবং বেশি উগ্রবাদী; মৌলবাদকে সমর্থন করে।
আমি ভারতের সাহসী সিআরপি জওয়ানদের প্রশংসা করি। তাঁরা অপরিসীম পরিপক্কতা দেখিয়েছেন এবং ভিড়ের উপর গুলি না করে, এমনকি তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এমন প্রচন্ড চাপের মধ্যে শান্ত থেকেছেন।
সাহসী জওয়ানরা ব্যর্থ হয়েছে— এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করার ধূর্ত পরিকল্পনা হচ্ছে।
আজ জওয়ানরা যদি একবারও গুলি চালাতেন, শেষ পর্যন্ত শীতলকুচির মতো হত। আজ যদি জনতার মধ্যে একজন মারা যেত, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর পুরো দলের নেতৃত্ব সীমাহীন দুর্নীতি এবং দোষীদের ধরার তদন্ত থেকে মনোযোগ সরাতে সফল হতেন।”

প্রসঙ্গত, ২০২১-এর ১০ এপ্রিল বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলাকালীন কোচবিহারের শীতলকুচির জোড়পাটকি এলাকার ১২৬ নম্বর বুথে গুলি চালায় সিআইএসএফ জওয়ানরা। গুলিতে ৪ জনের মৃত্যু হয়। তার আগে ওই বুথেই দুষ্কৃতীদের হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ১ যুবকের। ওই ঘটনার তদন্তভার সিআইডিকে দেয় রাজ্য সরকার। তদন্তে নেমে সিআইডি ওই বুথে মোতায়েন ৬ জন জওয়ানকে একাধিকবার তলব করে। আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন ৬ জওয়ান। শুনানিতে রাজ্য সরকারের তরফে সওয়ালে বলা হয়, শীতলকুচিতে গুলি চালিয়ে অতিসক্রিয়তার দেখিয়েছে সিআইএসএফ। পালটা কেন্দ্রীয় বাহিনীর তরফে সওয়াল করে বলা হয়, আত্মরক্ষায় গুলি চালানো অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *