ক্রীড়া প্রতিনিধি, আগরতলা, ৫ ডিসেম্বর।। ত্রিপুরা ক্রিকেট বহুযোজন পিছিয়ে গেছে আর সেটা হয়েছে মূলতঃ পরিচালনগত দক্ষতার অভাবে ও ত্রিপুরা ক্রিকেট এসোসিয়েশনের সভাপতির একগুঁয়েমির কারণে। ঠিক এভাবেই ক্ষোভ উগরে দিয়ে ত্রিপুরা ক্রিকেট এসোসিয়েশনের নির্বাচিত সম্পাদক তাপস ঘোষ টিসিএ-র বর্তমান পরিস্থিতি বিষয়ক আরও কিছু ব্যক্ত করেন। আজ, মঙ্গলবার বিকেলে শহরস্থিত ওনার নিজস্ব চেম্বারে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান। টিসিএ ওয়ান এজেন্ডা নিয়ে আহুত সাধারণ বৈঠকে জেনারেল বডি ভেঙ্গে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে খুবই অসময়োচিত, অযাচিত এবং নিন্দনীয় বলে আখ্যা দিয়েছেন। যাঁরা এহেন ন্যক্কারজনক সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁরা কোনভাবেই রাজ্য ক্রিকেটের মঙ্গল বা উন্নতি চায় না বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। এই সিদ্ধান্ত ক্রিকেটারদের মনোবল তলানিতে নিয়ে যাবে বলে ওনি মনে করেন। এমনিতেই রাজ্য চলতি মরশুমে জাতীয় ক্রিকেটের আসরে আশাপ্রদ ফলাফল করতে পারছে না। এক দুটো ম্যাচ বিক্ষিপ্তভাবে জিততে পারলেও বেশিরভাগ ম্যাচই বিশ্রী ভাবে হারছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে তিনি বলতে চেয়েছেন, ত্রিপুরার উচ্চ আদালতের মাননীয় বিচারপতি অরিন্দম লোধ বিগত ৩ আগস্ট এর নির্দেশমূলে পাঁচজন পদাধিকারীকে এক হয়ে রাজ্য ক্রিকেটের উন্নতিকল্পে কাজ করতে বলেছিলেন। একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অম্বুডসম্যান, এথিক্স অফিসার এবং সিইও নিয়োগ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিন মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও আজ অব্দি তা নিয়োগের কোনও খবর নেই। তাছাড়া, নির্দেশ ছিল ৯ আগস্ট সাধারণ সভা ডাকতে হবে এবং সেই সাধারণ সভার আলোচ্য সূচী সংস্থার সভাপতি ও সচিব মিলে চূড়ান্ত করবেন। কিন্তু সচিবকে এড়িয়ে সভাপতি ও যুগ্ম সচিব মিলে সাধারণ সভার আলোচ্য সূচি চূড়ান্ত করেন, যা মাননীয় উচ্চ আদালতের নির্দেশের পরিপন্থী। ৯ আগস্টের সাধারণ সভায় সভাপতি ও কিছু উঠকো লোক ঠুনকো কারণে উনাকে অযোগ্য ঘোষণা করে দেয় বলে তিনি ব্যক্ত করেছেন। এই বিষয়গুলো মাননীয় উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। আগামী ১৮ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। উল্লেখিত মামলায় তহবিল তছরুপের অভিযোগে মাননীয় উচ্চ আদালত বিশেষ তদন্তকারী দল অর্থাৎ সিট গঠনের জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সিট গঠনের পর তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে। বিশেষ তদন্তকারী দলকে আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে মাননীয় উচ্চ আদালতের নিকট রিপোর্ট দাখিল করতে হবে। তাছাড়া, এপেক্স কাউন্সিল ভঙ্গ করা ও সিট গঠনের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আরও একটি মামলা মাননীয় উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চে বিচারাধীন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১১ ডিসেম্বর ধার্য রয়েছে। রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বেশ কিছু বিষয় যখন ত্রিপুরা উচ্চ আদালতে বিচারাধীন ঠিক তখনই সংস্থার জেনারেল বডি ভেঙ্গে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া নিঃসন্দেহে আদালত অবমাননার সামিল বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার বর্তমান পরিচালকগণ মাননীয় সুপ্রিম কোর্টের আগাম সম্মতি না নিয়েই বিজ্ঞপ্তি মূলে কার্যকর করেছে। এটাও আদালত অবমাননার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ বলে তিনি জানিয়েছেন। এর দায়ও সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত কমিটি, উচ্চ আদালত কর্তৃক নিযুক্ত কমিশনার, টি সি এ-র সভাপতি এবং জেনারেল বডির সদস্যদের কাঁধে বর্তাবে বলে তিনি ব্যক্ত করেছেন। সব মিলে রাজ্য ক্রিকেট অতল গহ্বরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি তা রক্ষার্থে স্লিষ্ট শুভবুদ্ধি সম্পন্ন সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
2023-12-05