দুর্গাপুর, ২ ডিসেম্বর (হি. স.) : কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে ভিনরাজ্যের নার্সকে জঙ্গলে টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা! গলা টিপে পাশবিক অত্যাচারের অভিযোগ। আর্তনাদ শুনে আশপাশের বাসিন্দাদের তৎপরতায় উদ্ধার তরুনী নার্স। ঘটনাকে ঘিরে বিস্তর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শিল্পশহর দুর্গাপুরে। ঘটনায় এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রশ্ন মুখে শহরের নিরাপত্তা। প্রতিবাদে সরব বাম ও বিজেপি।
ঘটনায় জানা গেছে, আক্রান্ত ওই তরুনী ত্রিপুরার বাসিন্দা। দুর্গাপুর বিধাননগরে বেসরকারী হাসপাতালের নার্সের চাকরী করেন। সেই সুত্রে হাসপাতাল থেকে কিছুটা দুরে কালিগঞ্জে সংস্থার হোস্টেলে থাকতেন। গত বৃহঃস্পতিবার রাত্রে ডিউটি থেকে হোস্টেলে ফিরছিলেন। ওইসময় মাঝপথে ক্যানসার হাসপাতল সংলগ্ন রোডে তারপর আঁছড়ে পড়ে এক দুস্কৃতী বলে অভিযোগ। টেনে হেঁচড়ে রাস্তার পাশে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে গলা টিপে পাশবিক অত্যাচার চালায় ও ধর্ষনের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। দুস্কৃতীর হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে আর্তনাদ শুরু করে। তরুনীর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দুর্গাপুর নিউটাউনশিপ থানার পুলিশ। গুরুতর জখম ওই তরুনীকে বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করে। তার গলায় আঘাতের দাগ রয়েছে। ঘটনার পর চরম আতঙ্কে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। খবর পেয়ে ত্রিপুরা থেকে তার পরিবারের লোকজন দুর্গাপুরে এসেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে,” নার্স কর্মীদের নিজস্ব বাসে হোষ্টেলে পৌঁছানো হয়। এদিন নিজেই ফিরছিলেন। হাঁটাপথ হোস্টেলে যাওয়ার। তবে তার শারিরিক অবস্থা আগের থেকে অনেকটাই ভালো। মানসিকভাবে একটু ভেঙে পড়েছিলেন। সেটাও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে। পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে। পুলিশ দেখছেন বিষয়টি।” এদিকে ঘটনার পর প্রশ্নের মুখে শহরের নিরাপত্তা। স্থানীয়সুত্রে জানা গেছে, যে রাস্তাটি দিয়ে ওই তরুনী নার্স ফিরছিলেন, সন্ধ্যার অন্ধকার নামতেই ওই রাস্তার পাশে ঝোঁপজঙ্গলে মদ, গাঁজা ও সমাজবিরোধীদের আসর বসে। ফলে রাতের অন্ধকারে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। এদিকে প্রতিবাদে সরব হয়েছে বাম ও বিজেপি। শনিবার বিকালে সিপিএমের পক্ষ থেকে বিধাননগর ফাঁড়িতে বিক্ষোভ দেখানো হয়। থানার গেটের সামনে আসা মাত্রই বিক্ষোভকারীদের ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তুমুল বচসা শুরু হয় পুলিশের। শেষ পর্যন্ত বিক্ষোভের মুখে পড়ে ফাঁড়ির গেট খুলে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ। সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকার জানান,” প্রদীপের নীচে অন্ধকার। দুর্গাপুরে উৎসব নিয়ে মাতোয়ারা, লক্ষ প্রদীপ জ্বালানোর প্রস্তুতি চলছে। তখন রাতের শহরে মেয়েদের নিরাপত্তা নেই।” বিজেপি বিধায়ক লক্ষন ঘড়ুই বলেন,” দুর্গাপুর শহরে সমাজবিরোধীদের আঁখড়া তৈরী হয়েছে। শহরে নিরাপত্তা তলানিতে। ভিনরাজ্যের তরুনী নার্স কাজ করতে এসে শ্লীলতাহানির শিকার। তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অপরাধীর শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।” অন্যদিকে ঘটনায় অজিত মান্ডি নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার তাকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তার জামিন খারুজ করে চারদিনের পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দেন।