কলকাতা, ১৬ নভেম্বর (হি.স.): ‘‘দরিদ্রের চোখের জলের হিসাব কেউ নেননি। এ বার সময় এসে গিয়েছে।’’ বৃহস্পতিবার একটি মামলার শুনানীতে এই মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বলেন, গজদন্ত মিনারে বসে বিচার করলে চলবে না। অনেক হয়েছে। যথেষ্ট হয়েছে।
মৃত মায়ের চাকরি ছেলেকে না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর মন্তব্য, ‘‘গজদন্ত মিনারে বসে আর কত দিন বিচার চলবে?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মা মারা গিয়েছে, ওই সংসারের কী হবে? মায়ের চাকরি ছেলেকে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এমন চাকরি দেওয়ার নিয়ম তো রয়েছে। নিয়মের মধ্যে থেকে কেউ আবেদন করলে তাতেও বাধা কেন তৈরি হচ্ছে?’’
উত্তর ২৪ পরগনার একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন সলেনা খাতুন। ২০১৮ সালে অসুস্থতার কারণে তাঁর মৃত্যু হয়। মায়ের মৃত্যুর পরে ছেলে শেখ সাহিল ‘কমপ্যাশনেট’ নিয়োগের জন্য আবেদন করেন। তা খারিজ করে দেয় জেলা প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিল।
মায়ের মৃত্যুর সময় মামলকারী ছেলের বয়স ছিল ১৫ বছর ৭ মাস। তিনি ১৮ বছর হলে মায়ের জায়গায় চাকরির আবেদন করেন। এর আগে বিচারপতি অমৃতা সিংহ মামলাকারীর আবেদন জেলা প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিলকে বিবেচনা করে দেখার নির্দেশ দেন। তিনি জানান, দু’বছর পরে চাকরির জন্য আবেদন করলেও ছেলের আর্জি বিবেচনা করতে হবে। বিবেচনা করে এটিও খারিজ করা হয় বলে মামলাকারীর অভিযোগ।
নতুন করে মামলা দায়ের করা হয় হাই কোর্টে। মামলাকারীর আইনজীবী হলেন সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় এবং কিরণ শেখ। বৃহস্পতিবার ওই মামলাটির শুনানি ছিল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে।
শিক্ষা দফতরের আইনজীবী বিশ্বব্রত বসু মল্লিকের সওয়াল, একই ধরনের অন্য একটি মামলা খারিজ করে দিয়েছিল এই হাই কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ। ওই বেঞ্চ জানিয়েছিল, এ ভাবে ‘কমপ্যাশনেট’ নিয়োগ করা যাবে না। আগামী ২৮ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।