সাধারন নাগরিকদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়া সাংবাদিক সম্মেলনে বিরোধী দলনেতা অনিমেষ দেববর্মা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ অক্টোবর : রাজ্যে বর্তমান সময়ে সাধারন মানুষের সমস্যা সম্বলিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে বিরোধী শক্তির অস্তিত্বের জানান দিলেন বিরোধী দলনেতা অনিমেষ দেববর্মা। সম্পদ কর, বিদ্যুৎ মাশুল, প্যান কার্ড আঁধার ও কার্ড সংযুক্তিতে ১০০০ টাকা প্রদান প্রভৃতি বিষয় নিয়ে এদিন বিস্তারিত আলোচনা করেছেন তিনি।

এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে, প্যান ও আধার লিঙ্ক বাবদ হাজার টাকা আদায়ের ঘটনায় প্রতিবাদ করলেন বিরোধী দলনেতা। আধার কার্ড এবং প্যান কার্ডের লিংক করার ক্ষেত্রে ১০০০ টাকা জনগণের কাছ থেকে আদায় করার প্রতিবাদে সোচ্চার হলেন বিরোধী দলনেতা অনিমেষ দেববর্মা। রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে এই অর্থ আদায়ের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান তিনি। পাশাপাশি তিনি দাবি করেন ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা মধ্যে প্রয়োজন বিশেষে এই পরিষেবা বাবদ অর্থ আদায়ের করতে। তার কথায়, কিছুদিন পরপর বিভিন্ন নথিপত্রের নামে লাইনে দাঁড়িয়ে নাজেহাল হতে হয়  সাধারণ মানুষকে। তার মধ্যে প্যান কার্ড এবং আঁধার কার্ড লিঙ্ক করার ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণকে এক হাজার টাকা নিজের পকেট থেকে দিতে হচ্ছে। যার ফলে চরম আর্থিক হেনস্থার মুখে পড়ছে সাধারণ মানুষ।
বিরোধী দলনেতা অনিমেষ দেববর্মা অভিযোগ করে বলেন, যেসকল পরিবারে পাঁচ জন মানুষের প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক করতে হবে সেই পরিবারগুলিকে ৫০০০ টাকা দিতে হবে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই রাজ্যের সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে বলে এদিন দাবি করলেন বিরোধী দলনেতা।
তিনি আরো বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সমস্ত কাজের ক্ষেত্রে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক নয়। সেই কারণে তার কথায়, যদি প্রয়োজন হয় প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ডের লিংক করার তাহলে ন্যূনতম টাকার বিনিময়ে এই পরিষেবা জনগণকে প্রদান করতে হবে।

এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে প্রতিটি সাধারণ মানুষের এই হয়রানির চিত্র জনসমক্ষে তুলে ধরলেন বিরোধী দলনেতা। সরকারের প্রতি আহ্বান রাখেন এই পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে অর্থ আদায়ের বিষয়টি সরকার মানবিকতার সাথে বিচার করুক।
 তিনি  সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, সরকার বিদ্যুৎ পরিষেবা মানুষকে সঠিকভাবে দিতে না পারলেও বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি করেছে। এ বিষয়টা নিয়ে তিনি প্রতিবাদের সুরে বললেন শহরাঞ্চলে চলছে লোড সিডিং। বিদ্যুৎ নিগমের অফিস গুলিতে নেই পর্যাপ্ত পরিমাণে গাড়ি। গ্রামাঞ্চল গুলির অবস্থা অত্যন্ত করুন। তিনি নিজ বিধানসভা কেন্দ্র আশারাম বাড়ির প্রসঙ্গ টেনে বলেন একবার বিদ্যুৎ নষ্ট হয়ে গেলে তিন থেকে চার দিন সময় লেগে যায় বিদ্যুৎ সংস্কার করতে। তাই সরকারের বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি না করে কিভাবে মানুষকে সঠিকভাবে পরিষেবা দেওয়া যায় সেটা গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন ছিল বলে দাবি করেন তিনি।
তার কথায়, মন্ত্রী মহোদয় শুধু বলছেন নেশা মুক্ত ত্রিপুরা করবেন।কিন্তু নেশা মুক্ত ত্রিপুরা কিভাবে হবে সে বিষয়ে তাদের কাছ থেকে কোন আশা মিলছে না বিরোধী দলের। নেশা মুক্ত ত্রিপুরা যদি সত্যিই সরকার করতে চায় তাহলে নেশা মুক্ত কেন্দ্রগুলির মধ্যে গিয়ে কি ধরনের ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে সে বিষয়টাও খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। তার কথায়, শুধু মুখে বললে চলবে না, নেশা মুক্ত ত্রিপুরা গড়তে হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি। আগরতলা পুর নিগম এলাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ প্রসঙ্গে তিনি এদিন বলেন, এ ধরনের কার্যকলাপ দুর্গাপূজার আগে অত্যন্ত অমানবিক। এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য কিভাবে দয়া হলো না, তা নিয়ে পুর নিগমের দিকে প্রশ্ন তুললেন তিনি।  দুর্গাপূজার আগে সকলে এই শহরে ব্যবসা করে পরিবারের চাহিদা মেটাতে চায় বলে দাবি করেন তিনি। দুর্গাপূজার আগে দিকে দিকে চাঁদার জুলুমবাজি চলছে বলে তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ধর্মনগর থেকে আসার পথে মানুষ চাঁদার ঝুলুম বাজিতে পড়ছে।এমনকি জনপ্রতিনিধিদের এসকট পর্যন্ত থামিয়ে দিচ্ছে বলে তিনি প্রত্যক্ষ করেন। নিজ অভিজ্ঞতা থেকে তিনি জনগণের জন্য এদিন সরকারের উদ্দেশ্যে বললেন চাঁদার জুলুমবাজি বন্ধ করার জন্য। তবে চাঁদার জুলুম বাজি রুখতে কতজনকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করেছেন তিনি সে বিষয়টিও তিনি জানতে চান সরকারের কাছে।  পাশাপাশি সম্পদ কর নিয়েও এদিন জনগণের ভোগান্তির কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। সবমিলিয়ে বলা চলে এদিনের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে  রাজ্যে চলমান বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে বিরোধী শক্তির অস্তিত্বের জানান দিলেন বিরোধী দলনেতা ।