আগরতলা , ১৯ সেপ্টেম্বর : বিশ্ব রেল মানচিত্রে ভারতীয় রেলের একটি বিশেষ স্থান রয়েছে তার বিস্তৃতির কারণে। পার্বত্য রাজ্য ত্রিপুরাতে বর্তমানে প্রতিদিন প্রচুর সংখ্যক রেলের যাতায়াত রয়েছে। ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে বর্তমানে ১৮ টি রাজ্যের যোগাযোগ রয়েছে। কিন্তু রেলে যে নিরাপত্তার প্রয়োজন তা নেই বললেই চলে। কিছু সংখ্যা প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাদ দিয়ে দূরপাল্লার ট্রেনে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আরপিএফ এর কঠোর নজরদারি থাকা প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তব অন্যরকম কথা বলে। রাজধানী এক্সপ্রেস নিরাপত্তার ঘেরাটোপে আবৃত থাকলেও অন্যান্য দূরপাল্লার ট্রেনগুলিতে তেমন একটা নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নেই। রাজ্যের রাজধানী আগরতলা থেকে দূরপাল্লার ট্রেন যেমন কমলাবতী এক্সপ্রেস ,হাবিবগঞ্জ এক্সপ্রেস এগুলিতে যেমন নোংরা তেমনি নিরাপত্তা নিয়ে বিশাল প্রশ্ন দয়া করে দিয়েছে। সঠিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয় না বলে এই রেল গুলির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তা নিয়ে যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তা দিনের পর দিন গভীর রূপ নিচ্ছে। আগরতলা থেকে শুরু করে এন সি হিল পর্যন্ত কোন ধরনের আরপিএফ এর দেখা পাওয়া খুবই দুষ্কর। যখন যেখানে ইচ্ছে যত সময় মনে হয় রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়ে কোন টাইম টেবিলের বাধ্যবাধকতা নেই। এমনকি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত টু টায়ার বা থ্রি টায়ারে পর্যন্ত নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে এসেছে। প্রতিদিন যাত্রীরা তাদের বহুমূল্যবান জিনিসপত্র এবং টাকা পয়সা হারাচ্ছে। বেশি হলে সাধারণ মানুষ টাকা পয়সা খাওয়ানোর পর অভিযোগ জানাচ্ছে কিন্তু কোন অভিযোগের কোন সুরাহা কেউ পাচ্ছে না। রবিবার অর্থাৎ ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় আগরতলা থেকে যে কমলাবতী ট্রেনটি ছাড়ে তাতে ধর্মনগর থেকে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত টু টায়ারে ৩৩ নং সিটে সফর করছিলেন ধর্মগরের বুদ্ধ সরকার নামে এক ব্যক্তি নিউ জলপাইগুড়ি যাবেন বলে। রাত্রি সাড়ে দশটার দিকে খাওয়া শেষ করে হঠাৎ করে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। উনার গলায় একটি ব্যাগ কথা ছিল যেই ব্যাকে এক লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা ছিল বলে তিনি জানান। একটি কক্ষে চারটি সিট থাকলেও উপরের দুটি সিট খালি ছিল। পরদিন সকাল অর্থাৎ সোমবার সকাল সাড়ে সাতটায় যখন ঘুম ভাঙ্গে তখন ট্রেনটি গোহাটি অতিক্রম করে নিয়েছে। ঘুম থেকে উঠে দেখতে পান সবার সবকিছু থাকলেও উনার গলার ব্যাগটি নেই। বিস্মিত হয়ে ব্যাগ খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। কিন্তু কোথায় কিছু পাননি। ট্রেনের অন্যান্য যাত্রীরাও ব্যাগ খোঁজাখুঁজি করার পর অবশেষে পাওয়া যায় খালি ব্যাগ পড়ে আছে। ভেতরে এক টাকাও নেই। প্রত্যেকে ই কোথায় আরপিএফ রয়েছে তাদের নিরাপত্তার জন্য খুঁজতে থাকে। কিন্তু নিরাপত্তার বিন্দুমাত্র নিদর্শন তারা পাননি। অবশেষে কয়েকজন বলেন নিউ জলপাইগুড়িতে নেমে আরপিএফ এর দপ্তরে অভিযোগ জানানোর জন্য। এমনকি রাত ১০ টা পর্যন্ত কোন টিটিই কে পর্যন্ত পাওয়া যায়নি টিকিট চেক করতে আসার জন্য। এভাবেই একদিকে দিনের পর দিন দূরপাল্লার ট্রেন বেড়ে চললেও নিরাপত্তা বলতে কিছুই নেই উত্তর-পূর্ব ফ্রন্টিয়ার রেল কর্তৃপক্ষের। তাই সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে অন্ততপক্ষে দূরপাল্লার রেলগুলোতে যাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়। তা না হলে দিনের পর দিন মানুষ তাদের বহু মূল্যবান সামগ্রী টাকা-পয়সা হারিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরবে।
2023-09-19