আগরতলা ,১১ আগস্ট : কল্যাণপুরের জনজাতি এলাকায় ড্রাগসের কড়াল গ্রাসে এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্ট এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গোটা ত্রিপুরা রাজ্যেই প্রতিনিয়ত বাড়ছে ড্রাগস সহ রকমারি নেশার প্রভাব। ফলে সমাজ ব্যবস্থায় মৃত্যুর মিছিলও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। বিশেষ করে এই নেশায় আকৃষ্ট হচ্ছে যুব সমাজম আবারো কল্যাণপুর থানাধীন জনজাতি অধ্যুষিত বৈরাগী পাড়া এলাকায় ড্রাগসের কবলে পড়ে অকালে প্রাণ গেল ২০ বছর বয়সী এক যুবকের।
ঘটনার বিবরনে জানা যায়, কল্যাণপুর থানাধীন বৈরাগী পাড়া এলাকার ঋষিকেশ দেববর্মার ২০ বছরের ছেলে দানিশ দেববর্মা দীর্ঘদিন ধরেই ড্রাগস সহ বিভিন্ন রকমের নেশায় আসক্ত ছিল। তার পরিবার থেকে বহুবার অনেক চেষ্টা করা হলেও তাকে নেশার করাল ছায়া থেকে দূরে সরাতে পারেনি পরিবারের সদস্যরা। এমনকি বেশ কিছুদিন পদ্মবিল এলাকার একটি নেশা মুক্তি কেন্দ্রে রেখেও ছেলেকে নেশার এই মোহ থেকে দূরে সরাতে আপ্রাণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে বলে জানায় ঋষিকেশবাবু। অতি সম্প্রতি দানিশ নেশা মুক্তি কেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফিরে আসে। কিন্তু নেশামুক্ত হতে পারে নি সে। শুক্রবার দুপুর আনুমানিক একটা নাগাদ হঠাৎ সে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায়। তার আগে বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের সাথে দুপুরের খাবারও খেয়েছিল সে। কিন্তু এরপর সবার অলক্ষ্যে সে বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটা রাবার বাগানে গিয়ে ড্রাগস নেয় বলে পরিবার সূত্রে খবর। সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে পাঁচটা নাগাদ স্থানীয় মানুষের নজরে আসে নেশাগ্রস্ত দানিশ রাবার বাগানে অচৈতন্য হয়ে পড়ে রয়েছে। সাথে সাথেই তার পরিজন সহ অন্যান্যদের খবর দেওয়া হলে দেখা যায় দানিশ ঘটনাস্থলে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল মৃতদেহের সাথে সিরিঞ্জ সহ বিভিন্ন নেশা সামগ্রীও পাওয়া যায়। যা থেকে সহজেই অনুমেয় ড্রাগস সেবন করতে করতেই মৃত্যু হল ২০ বছর বয়সী দানিশের। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় কল্যাণপুর থানার পুলিশ। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কল্যানপুর হাসপাতালের মর্গে নিয়ে আসে। শনিবার মৃতদেহের ময়নাতদন্তের পর দেহ পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এব্যাপারে পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা লিপিবদ্ধ করে।
ড্রাগসের কবলে পড়ে এভাবে প্রত্যন্ত এলাকায় কুড়ি বছর বয়সী যুবকের মৃত্যুতে একদিকে যেমন তীব্র চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে, পাশাপাশি যেভাবে রাজ্যের গ্রাম পাহাড়েও ড্রাগস পৌঁছে যাচ্ছে, তাতে আদতে নেশা মুক্ত রাজ্য গঠন করা কতটুকু সম্ভব হবে এই প্রশ্ন কিন্তু ক্রমশ জোড়ালো হচ্ছে।
2023-08-11