আগরতলা, ৬ আগস্ট : দেশের ৫০৮ টি রেলস্টেশনের সঙ্গে আজ অমৃত ভারত ষ্টেশন স্কীমের অন্তর্গত রাজ্যের তিনটি রেল ষ্টেশনের আধুনিকীকরণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়ালি ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন । রাজ্যের মূল অনুষ্ঠানটি হয় উদয়পুর রেল স্টেশনে। এই প্রকল্পে ত্রিপুরার তিনটি রেল স্টেশন রয়েছে। সেগুলো হলো উদয়পুর ধর্মনগর এবং কুমারঘাট রেল স্টেশন। এদিনের উদয়পুর স্থিত মূল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ মানিক সাহা, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, বিধায়ক অভিষেক দেবরায়, মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, পদ্ম পুরস্কার প্রাপ্ত বিক্রম বাহাদুর জমাতিয়া, এন এফ রেলওয়ের লামডিং ডিভিশনের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার প্রেম রঞ্জন কুমার।
অনুষ্ঠানে ভাষন দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, দেশের সাধারন, মধ্যবিত্তসহ সকল শ্রেনীর রেলযাত্রীর সুবিধার জন্য অমৃত ভারত রেল স্টেশন প্রকল্পে ৫০৮ টি রেল স্টেশনের আধুনিকীকরণ করা হবে। বৃদ্ধ-বৃদ্ধা শিশু মহিলা সব ধরনের রেল যাত্রীর সুবিধার কথা বিবেচনা করেই এই প্রকল্প রূপায়ন করা হয়েছে । বিশ্বমানের হবে এই রেল স্টেশনগুলো। সর্বাধুনিক সুবিধা থাকবে। তিনি আরও যোগ করেন, রেল স্টেশনগুলোর উন্নয়নের কথা আগে ভাবা হতো না। ২০১৪ সালে কেন্দ্রে নতুন সরকার গঠিত হওয়ার পর রেলমন্ত্রকের জন্য বাজেটের পরিমান ৫ গুন বৃদ্ধি করা হয়েছে । নতুন নতুন রেলপথ পাতা হচ্ছে । ২০৩০ সালের মধ্যে সব ট্রেন বিদ্যুৎ-এ চলবে। দুষণ কমবে। রেল ষ্টেশনগুলোও গ্রীন ইনিশিয়েটিভ অনুযায়ী তৈরি হবে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের সব কয়টি রাজ্যের রাজধানী শিগগিরই রেলপথে জুড়বে। তিনি বিরোধীদের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, বিরোধীরা সরকারের সব কাজ নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেন। সমালোচনা করেন।
এদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা বলেন , রাজ্যে বর্তমান সরকার আশার পর ত্রিপুরার উন্নয়নের চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সাব্রুম পর্যন্ত রেল চলাচল করছে। চলতি বছরেই আগরতলা- আখাউড়া রেল সংযোগ হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর ফলে আগরতলা থেকে খুব অল্প সময়ে ট্রেনে কোলকাতায় পৌছানো যাবে ।তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দূরদৃষ্টির ফলে ত্রিপুরাতেও রেল ব্যবস্থায় উন্নয়ন ঘটেছে। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা তিনটি স্টেশন, উদয়পুর, ধর্মনগর এবং কুমারঘাটকে অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করায় প্রধানমন্ত্রী এবং রেলমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা এখন মনে করেন, তাঁরাও দেশের উন্নয়নের মূল স্রোতের শরিক। তিনি বলেন, ত্রিপুরায় হিরা মডেলকে গ্রহণ করার ফলে রাজ্যে উন্নয়নের জোয়ার এসেছে।
এদিকে কুমারঘাট ও ধর্মনগর রেল স্টেশনেও এদিন এই ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হয়েছে।
এদিন এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ধর্মনগর রেল স্টেশনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন, ধর্মনগর পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন প্রদ্যোত দে সরকার, লামডিং রেল ডিভিশনের ডিসিএম রমেশ মহাতা,জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, মহকুমা আধিকারিক সহ অন্যান্যরা।যাত্রীদের উন্নত পরিষেবা প্রদানের জন্য ৩২.৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ধর্মনগর রেল স্টেশনকে অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পে স্থান দেওয়া হয়েছে।
এদিকে কুমারঘাট রেলওয়ে স্টেশনের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৩০ কোটি ৬০ লক্ষ্য টাকা। রবিবার কুমারঘাট রেলস্টেশন চত্বরে মোদির ভার্চুয়ালি অমৃত ভারত স্টেশন এর শিলান্যাস হলো। মহা ধুমধামে বিশেষ আয়োজনের মধ্যে দিয়ে আজকের শিলান্যাস অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় কুমারঘাটে। উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা সরকারের তফশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তর ,পশুপালন ও মৎস দপ্তরের মন্ত্রী সুধাংশু দাস, জেলা শাসক তড়িৎ কান্তি চাকমা , সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা,এলাকার বিধায়ক ভগবান দাস ,জেলা পুলিশ সুপার কাঁটা জাহাঙ্গীর , কুমারঘাট মহকুমা শাসক সুব্রত দাস সহ জেলার অন্যান্য নেতৃত্ব সহ আধিকারিকরা।