কলকাতা, ১১ জুলাই (হি.স.): পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগণনাতেও হিংসা, অশান্তি অব্যাহত। বিভিন্ন জেলায় হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় পঞ্চায়েত ভোটের গণনা। ৩৩৯টি ভোটগণনা কেন্দ্রে স্ট্রংরুমের সংখ্যা ৭৬৭। গণনাকক্ষের সংখ্যা ৩,৫৯৪। ৩০,৩৯৬টি টেবিলে চলছে গণনা। গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে ফল ঘোষণা করবেন কাউন্টিং অফিসার। পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের ক্ষেত্রে ঘোষণা করবেন বিডিও। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রত্যেক স্তরে দু’রাউন্ড করে গণনা হবে। কোথাও কোথাও তিন রাউন্ড গণনা হবে। শেষ না হওয়া পর্যন্ত গণনা চলবে। ওই দিন গণনা শেষ না হলে পরের দিন চলবে বলে জানানো হয়েছে। এবারে একই সঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের ভোট গণনা করা হচ্ছে ।
ডায়মন্ড হারবারে বিরোধী এজেন্টকে ঢুকতে বাধা
ভোটগণনা শুরু হতেই দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার ডায়মন্ড হারবার ফকিরচাঁদ কলেজের গননাকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা বিরোধী এজেন্টদের। সকাল থেকে দুষ্কৃতীরা গণনাকেন্দ্রের সামনে জড়ো হয়। বিরোধী এজেন্টদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মুড়ি মুড়কির মতে বোমাবাজি চলছে। প্রতিবাদে বিরোধী সিপিএমের ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ।
নানুরে অশান্তি, ডিজে বক্স বাজিয়ে তৃণমূল কর্মীদের নাচ
মঙ্গলবার সকালে বীরভূমের নানুরে গণনাকেন্দ্রে যেতে সিপিএম কর্মীদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তাঁদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। প্রতিবাদে কীর্ণাহার বাসস্ট্যান্ডে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ সিপিএম কর্মীদের। যদিও অভিযোগ অস্বীকার শাসকদলের।
আবার ভোটগণনা শুরু হতেই গণনাকেন্দ্রের সামনে ডিজে বক্স বাজিয়ে নাচ করতে দেখা যায় তৃণমূলের কর্মীদের। বীরভূমে নানুর হাইস্কুলের সামনে মঙ্গলবার সকালে এই ছবি ধরা পড়ল। গণনার দিন বীরভূমের নানুরেই অশান্তির অভিযোগ উঠেছে। আর সেই নানুরেই এ বার অন্য ছবি ধরা পড়ল।
কেশপুরে উত্তেজনাপশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে গণনাকেন্দ্রে যেতে বিরোধী প্রার্থীদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে মেদিনীপুরে জেলাশাসকের দফতরে ধর্না কর্মসূচি বিজেপির।আমডাঙায় ‘অপহৃত’ দুই সিপিএম প্রার্থী
গণনাকেন্দ্রের সামনে থেকে দুই সিপিএম প্রার্থীকে অপহরণ করার অভিযোগ উঠল উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙায়। অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল। এক সিপিএম প্রার্থীর নাম বিশ্বজিৎ সামন্ত। তিনি সন্তোষপুর ১৩৯ নম্বর বুথের প্রার্থী। অন্য সিপিএম প্রার্থীর নাম মহম্মদ কুতুবউদ্দিন। তিনি চণ্ডীগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫৭ নম্বর বুথের প্রার্থী। পরে কুতুবউদ্দিনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
সিপিএম প্রার্থীর পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগপূর্ব বর্ধমানের গলসি এক নম্বর ব্লকের বুদবুদে ভোট গণনা কেন্দ্রে ঢুকতে সিপিএম প্রার্থীকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ। সিপিএম প্রার্থী তরুণ পদ বাগদির পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ। তিনি গলসি এক নম্বর ব্লকের পারাজ গ্রাম পঞ্চায়েতের রানাডি গ্রামের ১৭৪ নম্বর বুথের প্রার্থী। অন্য দিকে, শিড়রাই গ্রাম পঞ্চায়েতের পুরাতন গ্রামের কংগ্রেস সমর্থক কাজল মুন্সিকে মারধর করে পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। গলসি এক নম্বর ব্লকের পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের ৬৫ নম্বর আসনের প্রার্থী জয়শ্রী বিষ্ণুকে পুলিশের সামনেই মেরে গণনাকেন্দ্র থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। স্ট্রংরুম থেকে তাঁর ব্যাগ এবং পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল।হুগলির জাঙ্গিপাড়ায় উত্তেজনা
হুগলির জাঙ্গিপাড়ায় ডিএন হাইস্কুলের গণনাকেন্দ্র থেকে সিপিএম এবং আইএসএফের এজেন্টদের মারধর করে বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। গাড়ি ভাঙচুরেরও অভিযোগ করা হয়েছে। ফুরফুরা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তথা জেলা পরিষদের প্রার্থী শামিম আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ। অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল।
হাওড়ার বাগনানে উত্তেজনাহাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় গণনাকেন্দ্রে সিপিএমের এজেন্টদের ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠল। তাঁদের মারধর করারও অভিযোগ উঠেছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, শাসকদল এবং প্রশাসন একসঙ্গে এই কাজ করছে। বাগনান, জগদীশপুর, আমতার বিভিন্ন এলাকায় এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। বাগনানে টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করা হয়। থানার সামনে অবস্থান বামেদের।