বিশেষ প্রতিবেদন: (প্রণব অখণ্ড, পর্বতারোহী), আগরতলা, ২৮ মে।। প্রথম মহাযুদ্ধের পর থেকেই শুরু হয় বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু এভারেস্ট শৃঙ্গ জয়ের প্রতিযোগিতা। তারই প্রচেষ্টা শুরু হয় ১৯২১ সালের অনেক আগে থেকেই। সফলতা আসে ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৯শে মে। কর্নেল জন হান্টের নেতৃত্বে নিউজিল্যান্ডের এডমন্ড পার্সিবল হিলারি সহযোগী হিসেবে ভারতীয় তেনজিং নোরগে নেপালের দিক থেকে দক্ষিণ-পূর্ব গিরিপথ ধরে প্রথম এই শৃঙ্গ জয় করেন। আবার ১৯৭৫ সালে জাপানী গৃহবধূ জানকো তাবেই প্রথম মহিলা হিসেবে এই শৃঙ্গ জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করেন। শুরুর দিকে ভারত ও তিব্বত সরকার এভারেস্টে আরোহণ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল। পরবর্তীতে ব্রিটিশ সরকারের মধ্যস্থতায় দুই দেশের সরকারই এভারেস্টে আরোহণের বিষয়ে একমত হয়। সকল প্রতিকূলতা শেষে রয়েল জিওগ্রাফিক সোসাইটির অর্থায়নে গঠিত এভারেস্ট কমিটির অধীনে ১৯২১ সালে কর্নেল সিকে হাওয়ার্ড বেরী প্রথম অভিযান শুরু করেন। দলে ছিলেন জর্জ ম্যালোরি এবং আরো অন্যান্যরা। মুলত এটা ছিল এভারেস্টের ম্যাপিং আর রেকি অভিযান। দীর্ঘ ৫ মাস ধরে এভারেস্টে ওঠার সম্ভাব্য পথ খুঁজতে থাকেন তারা। এই দলের দুঃসাহসী এক সদস্য ম্যালরি তার অপর দুই সঙ্গীকে নিয়ে ৭,১০৪ মিটার (১৯,১০০ ফুট) উঁচুতে এভারেস্টের শীর্ষ চূড়ায় যাওয়ার একটি নিরাপদ রাস্তা খুঁজে বের করেন। কিন্তু চূড়ায় ওঠার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
এর পরের বছর ১৯২২ সালে দলনায়ক জেনারেল ব্রুস এর অধীনে আবার নতুন করে অভিযানে নামেন ম্যালরিরা।
ব্রিটিশ পর্বতারোহীরা সর্বপ্রথম এই পর্বতশৃঙ্গ আরোহণের চেষ্টা শুরু করেন। নেপালে এই সময় বিদেশীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকায় ব্রিটিশরা তিব্বতের দিক থেকে এই পর্বতের উত্তর শৈলশিরা ধরে বেশ কয়েক বার আরহণের চেষ্টা করেন। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের এভারেস্ট পর্বত অভিযানে ব্রিটিশরা তিব্বতের দিক থেকে ৭,০০০ মি (২২,৯৭০ ফু) উচ্চতা পর্য্যন্ত ওঠেন। এরপর ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের অভিযানে তারা এই পথে ৮,৩২০ মি (২৭,৩০০ ফু) উচ্চতা পর্য্যন্ত ওঠে মানবেতিহাসের নতূন কীর্তি স্থাপন করেন। এই অভিযানে অবতরনের সময় তুষারধ্বসে সাতজন মালবাহকের মৃত্যু ঘটে। ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের অভিযান এভারেস্ট আরোহণের ইতিহাসের সবচেয়ে রহস্যময় অভিযান: জর্জ ম্যালোরি ও অ্যান্ড্রিউ আরউইন শৃঙ্গের দিকে আরোহণের একটি অন্তিম প্রচেষ্টা করেন কিন্তু আর ফিরে আসতে ব্যর্থ হন। যার ফলে তাদের আরোহণই প্রথম সফল আরোহণ কি না তা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। তবে তেঞ্জিঙ নোরগে আর এডমন্ড হিলারীর নাম স্বর্ণাক্ষরে চিরকাল লিখা থাকবে এভারেস্টের বুকে।