এগরাকাণ্ডে বিজেপির তরফে গ্রামাবাসীদের আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস শুভেন্দুর,কান্নায় ভেঙে পড়লেন নিহতের পরিজনেরা

কলকাতা, ১৭ মে (হি. স.) : মঙ্গলবার এগরায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণকাণ্ডে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। বুধবার বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শনে যান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কথা বলেন স্থানীয়দের সঙ্গে। নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনহারাদের পরিবার। গোটা ঘটনায় রাজ্য প্রশাসনকে তুলোধনা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করেছেন তিনি। সেই দাবিতে মিছিলেরও ডাক দিয়েছেন শুভেন্দু।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশকে তীব্র আক্রমণ করেন শুভেন্দু। প্রশ্ন তোলেন, আর্থিক সাহায্য নিয়েও। অভিযুক্ত কৃষ্ণপদ বাগের ভাই বাদে গ্রামের সবাইকে বিজেপির তরফে আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দেন শুভেন্দু।

এদিন শুভেন্দু বলেন, ‘আমি এনআইএ তদন্তের দাবিতে আদালতে গিয়েছি। এর শেষ দেখব। পুলিশ তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে।’ সরকারে দেওয়া আর্থিক সাহায্যের বিরোধীতা করে শুভেন্দু জানান, ওই টাকা বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের। তৃণমূলের পার্টি অফিস থেকে এই টাকা দেওয়া হলে কেউ যেন না নেন, সেকথাও বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘এগরায় ২৫ হাজার লোক নিয়ে মহামিছিল হবে। পুলিশমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে মহামিছিল হবে।’ এদিন বিরোধী দলনেতার নিশানায় সিভিক ভলান্টিয়ারও। তিনি বলেন, ‘সিভিক ভলান্টিয়ারদের তোলা তুলতে ব্যবহার করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ জ্বলছে, বগটুই থেকে শুরু হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে না সরালে বাংলার পরিত্রাণ নেই।’ এগরায় যার বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়েছে সেই ব্য়ক্তি ভানু বাগের বাড়িও পাহারা দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ। এমনটাই অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারীর। প্রমাণ লোপাট ঠেকাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা।

এদিন শুভেন্দুকে পালটা দিয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী তাঁর তরফে যা করার তাই করেছেন। এনআইএ তদন্তে যে সমস্যা নেই, সেই অবস্থানওতো স্পষ্ট করেছেন তিনি। বিরোধী দলনেতা জনবিচ্ছিন্ন, তাই এসব করে প্রচারে আসতে চাইছেন।’

এদিনই এগরার গ্রামে যায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। মানস ভুঁইয়া ও দোলা সেনের নেতৃত্বে খাদিকুল গ্রামে যায় ওই প্রতিনিধি দল। তাঁদের দেখে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীদের একাংশ। চোর চোর স্লোগান তুলে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তারপরেই গ্রাম থেকে বেরিয়ে যায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুপুরে তীব্র বিস্ফোরণ হয় পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুলে। এলাকার একটি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে এলাকার রাস্তায় ছিন্নভিন্ন দেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। বিস্ফোরণের জেরে বাজি কারখানাটি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। অনেকেরই অনুমান, ওই কারখানায় বাজি তৈরির আড়ালে বোমা তৈরি হত। সেখান থেকেই এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। এদিন এগরায় পৌঁছে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানার ছাদ থেকে গোটা এলাকা পরিদর্শন করেন শুভেন্দু। এরপর চলে যান, কারখানার ২০০ মিটার দূরে জনবসতিপূর্ণ এলাকায়। তাঁকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্থানীয়রা।