আগরতলা, ২ মে (হি. স.) : ত্রিপুরায় বিনিয়োগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে শিল্পপতিদের সাথে গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। ত্রিপুরা সরকার ওই বৈঠকের মাধ্যমে রাজ্যে বিনিয়োগের আহবান জানিয়েছে। আজ ৮টি মৌ স্বাক্ষর হয়েছে। তাতে, ৩১২.৩৮ কোটি বিনিয়োগের দরজা খুলেছে। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক (ডা.) মানিক সাহা অত্যন্ত খুশি হয়ে জানিয়েছেন, পিপিপি মডেলে ধলাই জেলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপনে মৌ স্বাক্ষর হয়েছে। এই পদক্ষেপ ত্রিপুরার স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা করবে।
প্রসঙ্গত, আজ প্রজ্ঞা ভবনে শিল্পপতিদের সাথে গোল টেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক(ডা.) মানিক সাহা, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী সান্তনা চাকমা, ডোনার সচিব লোক রঞ্জন, ত্রিপুরার মুখ্য সচিব জে কে সিনহা, শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের বিশেষ সচিব অভিষেক চন্দ্র প্রমুখ। এছাড়া সারা দেশের প্রায় ৭০ জন বিনিয়োগকারী এদিনের বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। তাঁরা ত্রিপুরায় বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
ইতিপূর্বে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিনিয়োগের মাত্রা বাড়াতে ডোনার মন্ত্রক এবং এফআইসিসি আই নর্থ ইস্ট গ্লোবাল ইনভেস্টরস সামিটের উদ্যোগ নিয়েছে। তাতে, কর্মসংস্থান বাড়বে, সেই লক্ষ্য স্থির করেই এগিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরই অঙ্গ হিসেবে প্রস্তাবিত সামিট রাজ্যস্তরেও অনুষ্ঠিত হবে। ওই সামিটে রাজ্যগুলির শিল্প সম্ভাবনার বিভিন্ন দিক শিল্পপতিদের সামনে তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুফল সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের অবগত করা হবে।
এদিনের বৈঠকে বিনিয়োগকারীরা সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকার এবং ত্রিপুরা সরকারের আধিকারিকদের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরাসরি কথা বলেছেন। মূলত, কৃষি, উদ্যানশিল্প, পর্যটন, হস্ত তাঁত, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, রাবার, চা, বাঁশ, তথ্য প্রযুক্তি, উচ্চ শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং বন ভিত্তিক পণ্য যেমন আগর নিয়ে আলোচনা প্রাধান্য পেয়েছে।
গত কয়েক বছরে ত্রিপুরায় শিল্প বান্ধব পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। এক্ষেত্রে রাস্তা, রেল, বিমান পথে যোগাযোগ আরও উন্নত হয়েছে। এছাড়া, বিদ্যুৎ, শিল্পতালুক, স্পেশাল ইকোনমিক জোন, সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেম এবং নয়া শিল্প নীতি ত্রিপুরায় বাণিজ্য ক্ষেত্রে উন্নতির নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে। ত্রিপুরায় পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং বিভিন্ন শিল্পের যথেষ্ট সম্ভাবনা ভাল সংখ্যক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করেছে। তাতে, ৩০০ কোটির অধিক বিনিয়োগে আজ মৌ স্বাক্ষর হয়েছে। বিশেষ করে, স্পেশাল ইকোনমিক জোন বিনিয়োগকারীদের দারুণভাবে আকর্ষিত করেছে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক(ডা.) মানিক সাহা বলেন, অত্যন্ত আনন্দের সাথে জানাচ্ছি ত্রিপুরা সরকারের সাথে ৮ জন শিল্পপতি ৩১২.৩৮ কোটি টাকা বিনিয়োগে মৌ স্বাক্ষর করেছেন। তাতে, ধলাই জেলায় পিপিপি মডেলে মেডিকেল কলেজ স্থাপনেও মৌ স্বাক্ষরিত হয়েছে। তাঁর কথায়, ত্রিপুরায় দুইটি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এখন পিপিপি মডেলে আরও একটি মেডিকেল কলেজ ত্রিপুরার স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা করবে।
ত্রিপুরার বিভিন্ন পরিকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে আলোকপাত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিল্পের প্রসারে যোগাযোগ প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে ত্রিপুরায় ৭টি জাতীয় সড়ক এবং শক্তিশালি রেল নেটওয়ার্কে প্রায় ১১-১২টি এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করছে। শুধু তাই নয়, আকাশ পথের সাথে জল পথেও যোগাযোগের বিস্তার ঘটছে।
তাঁর কথায়, আমাদের প্রচেষ্টা ত্রিপুরার অবকাঠামোর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগকারীদের জন্য দরজা উন্মুক্ত করেছে। বিশেষত বাঁশ, বর্জ্য, কাঠকয়লা, রাবার, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, কোল্ড চেইন, স্বাস্থ্যসেবা, আতিথেয়তা এবং পর্যটন খাতে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। তিনি আজ সমস্ত বিনিয়োগকারীদের সকল প্রকারের সহায়তার আশ্বাস দিয়ে ত্রিপুরায় বিনিয়োগের আবেদন জানিয়েছেন।
2023-05-02