হাফলঙে উদযাপিত দেশের প্ৰথম স্বশাসিত পরিষদ ‘উকাপাস্বপ’-এর ৭২-তম প্রতিষ্ঠা দিবস

হাফলং (অসম), ২৯ এপ্রিল (হি.স.) : বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আজ শনিবার উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদ (উকাপাস্বপ বা এনসিএইচএসি)-এর ৭২-তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন করা হয়েছে। ১৯৫২ সালে ষষ্ঠ তফশিলির অধীনে তদানীন্তন উত্তর কাছাড় পার্বত্য জেলা, অধুনা ডিমা হাসাও জেলার বিভিন্ন জাতি-জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি-সংস্কৃতি, ভাষা-সাহিত্য, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার সুরক্ষিত করতে উত্তর কাছাড় পার্বত্য পরিষদ গঠন করা হয়েছিল। এই উত্তর কাছাড় পার্বত্য পরিষদই হচ্ছে দেশের প্রথম স্বশাসিত পরিষদ।

এক এক করে এবার ৭২ বছরে পা দিয়েছে উত্তর কাছাড় পার্বত্য পরিষদ। তাই উত্তর কাছাড় পার্বত্য পরিষদ কর্তৃপক্ষ শনিবার পার্বত্য পরিষদের ৭২-তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। শনিবার উত্তর কাছাড় পার্বত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে পরিষদ কার্যলয়ে বিভিন্ন জনজাতি জনগোষ্ঠীর কাস্টমারি কোর্টের এক নতুন ভবনের শিলান্যাস করার পাশাপাশি কলেজের ছাত্রছাত্রীদের আসা-যাওয়ার সুবিধার্থে দুটি বাসের ফ্ল্যাগ অব করেন উত্তর কাছাড় পার্বত্য পরিষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য দেবোলাল গার্লোসা। তার পর হাফলং জেলা গ্রন্থাগার প্রেক্ষাগৃহে পার্বত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

প্রদীপ প্রজ্বলন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য দেবোলাল গার্লোসা। অনুষ্ঠানে দেবোলাল গার্লোসা ঘোষণা করেন, ডিমা হাসাও জেলার গ্রামপ্রধানদের বেতন দেড় হাজার টাকা থেকে তিন হাজার টাকা করা হবে। তিনি বলেন, ডিমা হাসাও জেলার গ্রামপ্রধানদের আগে বেতন ছিল মাসে ৭৫ টাকা। কিন্তু উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর গ্রামপ্রধানদের বেতন দেড় হাজার টাকা করা হয়েছিল। এখন তা বৃদ্ধি করে তিন হাজার টাকা করা হবে।

তাছাড়া দেবোলাল গার্লোসা অসমের অন্যতম পাহাড়ি জেলার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে জেলার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্মের খতিয়ান তুলে ধরে বলেন, এই পাহাড়ি জেলার সার্বিক বিকাশে তিনি সব সময় কাজ করে যাবেন এবং এ ক্ষেত্রে তিনি সকল জাতি জনগোষ্ঠীর সহযোগিতা কামনা করেন।

তিনি বলেন, গত ২৭ এপ্রিল নয়াদিল্লিতে ডিএনএলএ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সরকারের যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে তা শুধু ডিমাসা জনগোষ্ঠীর জন্য নয়, এতে সব জনগোষ্ঠীর জন্য সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। তিনি বলেন, ডিএইচডি উভয় গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারের যে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছিল তা-ও শুধু ডিমাসা জনগোষ্ঠীর জন্য ছিল না, পাহাড়ে বসবাসরত সকল জনগোষ্ঠীর জন্য সুযোগ-সুবিধা ছিল। তাই জেলার বিভিন্ন জায়গায় এই চুক্তির অধীনে বিভিন্ন প্রকল্পের সফল রূপায়ণ করা হয়েছে, বলেন দেবোলাল গার্লোসা।

পাহাড়ি জেলার সার্বিক বিকাশে সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন দেবোলাল গার্লোসা। এদিন উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উত্তর কাছাড় পার্বত্য পরিষদের অধ্যক্ষ রাণু লাংথাসা, পার্বত্য পরিষদের কার্যনিৰ্বাহী সদস্য, পরিষদ সদস্য সহ উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের প্রধানসচিব টিটি দাওলাগাপু, পরিষদের নর্মাল সেক্টরের প্রধানসচিব দেবানন দাওলাগাপু প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *