শিলচর (অসম), ২৪ এপ্রিল (হি.স.) : বার্মিজ সুপারির বিরুদ্ধে অভিযানে নেমে বৃহৎ সাফল্য পেয়েছে কাছাড় জেলার গুমড়া পুলিশ । গতকাল রবিবার এক অভিযানে নেমে বড়সড় সাফল্য লাভ করেছে পুলিশের একটি বিশেষ দল। কাছাড় জেলার অসম-মেঘালয় সীমান্তবর্তী দিগরখাল টুলগেট সংলগ্ন কালাইনছড়া থেকে পুলিশের দল বাজেয়াপ্ত করেছে বার্মিজ সুপারি বোঝাই আটটি লরি। এগুলি থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ১,৮০০ বস্তা বার্মিজ সুপারি। বাজেয়াপ্তকৃত বাৰ্মিজ সুপারিগুলির বাজারমূল্য কমপক্ষে ৪ কোটি টাকা হবে বলে পুলিশের এক সূত্রে জানা গেছে।
মোট ১,৫৩,৩৮০ কেজি বার্মিজ সুপারি সমেত এএস ০১ এফ ৩৮১৫, আরজে ৪ জিএল ৮৩৩৭, আরজে ৩৭ জিবি ০৪৭৪, ইউপি ২১ বিএন ৫১৬৯, ইউপি ২১ বিএন ৮৯৬৯, ইউপি ২১ বিএন ৯৩১৮, এনএল ০১ এল ৮৪৪৮ এবং এএস ১১ সিসি ৯১০৭ নম্বরের আটটি লরি আটক করেছে পুলিশ ।
বার্মিজ সুপারি পাচারের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে লরি চালক এবং খালাসি সহ গ্রেফতার করা হয়েছে দশজনকে। এর মধ্যে দুজন কাছাড় এবং হাইলাকান্দি জেলার বাসিন্দা। বাকিরা বহিঃরাজ্যের। এছাড়া উত্তরপ্রদেশের একই পরিবারের রয়েছে চারজন।
পুলিশের হাতে ধৃত চালক সহ খালাসি যথাক্রমে হাইলাকান্দি জেলার জানকিবাজারের জনৈক জালাল উদ্দিন চৌধুরীর পুত্র নাজমুল হুসেইন (৩২), কাছাড় জেলার কাটিগড়া সৈদপুর এলাকার মোহাম্মদ মোজাম্মিল আলি লস্করের পুত্র জাহির আহমেদ লস্কর (৩৫), রাজস্থানের জয়পুর জেলার চালসারের বাসিন্দা জনৈক রতন সিংয়ের পুত্র দিলীপ সিং (৪৮), উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ জেলার তাহারপুরের জনৈক মোহাম্মদ আলির পুত্র শান আলম (২১), তাহজিব আলম (২৪), জাহানে আলম (২০), একই এলাকার জনৈক মোহাম্মদ ভুগিসের পুত্র মোহাম্মদ কাইফ (২০), জনৈক জারিনের পুত্র ভাসিম (২৬) রাজস্থানের শিখর জেলার জনৈক ভগবান রামের পুত্র দীনেশ (৩২), বিহারের মুজাফরপুর জেলার গৌচিখান এলাকার জনৈক বিজনন্দন রাইয়ের পুত্র দীপক কুমার (২২)।
আজ সোমবার কাছাড়ের পুলিশ সুপার নোমাল মাহাতো সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ধলাই, গুমড়া, কালাইন, কাটিগড়া সহ একাধিক এলাকায় বিশেষ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৫-টি কন্টেইনার সহ মোট ৮-টি লরি আটক করা হয়েছ। গাড়ির সিক্রেট চেম্বারে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় বৃহৎ পরিমাণের বার্মিজ সুপারিগুলি।
পুলিশ সুপার বলেন, ধৃতদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী অফিসাররা। তাদের মোবাইল ফোনের হ্যান্ডসেট বাজেয়াপ্ত করে কল লিস্ট খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী দল।
এসপি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশ রয়েছে। কোনওভাবেই বার্মিজ সুপারিকাণ্ডে জড়িতদের রেহাই দেওয়া হবে না। পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
প্রসঙ্গত, বার্মিজ সুপারির বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার কঠোর স্থিতি অবলম্বন করলেও বরাক উপত্যকা জুড়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে সিন্ডিকেট চক্র। প্রতিদিন লরি, তেলের ট্যাংকার, যাত্রীবাহী গাড়িতে করে মিজোরাম থেকে কাছাড় জেলা হয়ে অবৈধভাবে ভিন রাজ্যে পাচার করা হয় বর্মিজ সুপারি। কাছাড় পুলিশ গত তিনমাসে প্রায় প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযানে চালিয়ে বহু কোটি টাকার বার্মিজ সুপারি সহ যানবাহন বাজেয়াপ্ত করে অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

