কৈলাসহরের নুরপুরে টিএসআর কনস্টবলের মারধরে গুরুতর আহত ক্রিকেটার

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২ এপ্রিল৷৷ খোদ পুলিশ কনস্টেবল প্রকাশ্যে এক ক্রিকেটারকে বেধড়ক মারধর করে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল প্রকাশ্যেই ঘুরাফেরা করলেও থানার পুলিশ বাবুরা অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবলকে গ্রেফতার না করায় জনমনে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে৷ শুধু তাই নয়, ঘটনার প্রায় পাঁচ দিন অতিক্রান্ত হলেও থানার পুলিশ বাবুরা আজ অব্দি মামলা রেজিস্ট্রিও করেনি৷ ঘটনার পর থেকে আক্রান্ত ক্রিকেটার ৫দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও পুলিশ একবারের জন্যও আক্রান্ত ক্রিকেটারের খোঁজ খবর নেয়নি কিংবা তদন্তের স্বার্থেও আক্রান্ত ক্রিকেটারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হাসপাতালে যায় নি৷ ঘটনা কৈলাসহরের নুরপুর গ্রাম এলাকায়৷ উল্লেখ্য, কৈলাসহরের লক্ষীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে রাজদরপুর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা ত্রিশ বছরের জামিল আহমেদ বক্স৷ জামিল আহমেদ বক্স কৈলাসহরের উদিয়মান ক্রিকেটার হিসেবে গোটা কৈলাসহর মহকুমায় পরিচিতি রয়েছে৷ গত ঊনত্রিশ মার্চ বিকেলে কৈলাসহরের নুরপুর গ্রামে ক্রিকেট খেলতে যায় জামিল আহমেদ বক্স৷ খেলায় জামিল আহমেদ বক্স নিজে বোলিং করে আউট করে দেয় বিপক্ষ দলের মঈন উদ্দিন নামের এক খেলোয়াড়কে৷ মঈন উদ্দিনের বাড়িও রাজদরপুর গ্রামে৷ মঈন উদ্দিন ত্রিপুরা পুলিশে কর্মরত৷ মঈন উদ্দিন আউট হবার পর জামিল আহমেদ বক্সকে বেধড়ক মারধর শুরু করে৷ এমনকি জামিলকে শ্বাসরুদ্ধ করে মেরে ফেলারও চেস্টা করে বলে জামিল নিজেই জানায়৷ পরবর্তী সময়ে নিজের জীবন বাচাতে জামিল দৌড়ে পালিয়ে যাবার চেস্টা করলে জামিলকে দৌড়ে নিয়ে পুকুরের জলে ফেলে দিয়ে জামিলের মাথায় চাপ দিয়ে জলের নীচে রেখে দিয়ে প্রানে মারারও চেষ্টা করা হয় বলে জামিল নিজেই জানান৷ পরবর্তী সময়ে গ্রামেবাসীরা এবং জামিলের আত্মীয় স্বজনরা এগিয়ে এসে জামিলকে উদ্ধার করে৷ ঘটনায় জামিল সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে৷ ঘটনার সাথে সাথেই জামিলকে চিকিৎসার জন্য কৈলাসহরের রাজিব গান্ধী মেমোরিয়াল মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়৷ ত্রিশ মার্চ রাতে জামিলের অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় মহকুমা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জামিলকে ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে রেফার করে দেয়৷ মঈন উদ্দিন ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে জামিলের কোমড়ে এবং ডান হাতে বেধড়ক ভাবে মারধর করায় জামিলের ডান হাত ভেংগে যায়৷ জামিলকে শ্বাসরুদ্ধ করে মারার জন্য জামিলের গলা চেপে ধরায় এখনও জামিলের গলায় মঈন উদ্দিনের হাতের নখের ছাপ রয়েছে৷ জামিল আহমেদ বক্স এও জানায় যে, মারধরের ঘটনায় মঈন উদ্দিনের সাথে আরও চার পাঁচ জন যুবক জড়িত রয়েছে এবং মঈন উদ্দিন সে নিজে একজন পুলিশ কনস্টেবল৷ ঘটনার পর ঊনত্রিশ মার্চ সন্ধ্যায় কৈলাসহর থানায় পুলিশ কনস্টেবল মঈন উদ্দিন সহ ঘটনায় জড়িত সবার নামে লিখিত মামলা করা হলেও ঘটনার প্রায় ৫দিন অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও কৈলাসহর থানার পুলিশ মামলাটি আজ অব্দি রেজিস্ট্রিও করেনি৷ অথচ অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল মঈন উদ্দিন প্রকাশ্যেই ঘুরাফেরা করলেও কৈলাসহর থানার পুলিশ বাবুরা মঈন উদ্দিনকে গ্রেফতারও করছে না৷ জামিল আরও জানায় যে, অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল মঈন উদ্দিন ঊনকোটি জেলার পুলিশ সুপারের অফিসে বর্তমানে কর্মরত রয়েছে৷ খোদ আইনের লোক হয়ে বেআইনী কাজ করায় গোটা কৈলাসহরে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে৷ এই ঘটনায় কৈলাসহরের লক্ষীপুর, নুরপুর, রাজদরপুর ইত্যাদি এলাকায় যেকোনো সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে অনেকেরই অভিমত৷ এবং এরজন্য দায়ী থাকবে কৈলাসহর থানার পুলিশ৷ এই ঘটনায় পুলিশের অভিমত জানার চেস্টা করলে কৈলাসহর থানার পুলিশ অফিসাররা জানায় যে, থানার ওসি ছুটিতে আছেন৷ ওসি ছাড়া কেউ এব্যাপারে কিছুই বলবে না৷