লিমা, ২০ জানুয়ারি (হি.স.) : পেরুতে চলমান সরকার বিরোধী বিক্ষোভে আরও দুই আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়ালো ৫৪ জনে। প্রশাসন জানায়, মাকুসানি শহরের পুলিশ স্টেশন আর বিচার বিভাগীয় অফিসে অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষোভকারীরা। তাদের প্রতিহত করতেই এলোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়ে পুলিশ সদস্যরা। এতে প্রাণহানির পাশাপাশি আহত হয়েছেন অনেকে। তাছাড়া, রাজধানী লিমাসহ অন্যান্য বড় শহরগুলোও বিক্ষোভে উত্তাল।
আরও জড়াল হচ্ছে পেরুর সরকার বিরোধী আন্দোলন । আন্দোলনকারীদের দাবি, কারাবন্দি সাবেক প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিলোর নিঃশর্ত মুক্তি। গেলো ডিসেম্বরে, অভিশংসনের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতা থেকে হঠানো হয়। কোনো বিচার ছাড়াই কাস্তিলোকে ১৮ মাসের আটকাদেশ দেন আদালত। বিক্ষোভকারীরা আরও চান, আগাম নির্বাচন, সংবিধানের সংস্কার এবং নতুন সরকারের বিদায় চেয়ে পেরু রাজধানী লিমায় হাজার হাজার লোক বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ করেছেন। গেল মাস থেকে শুরু হওয়া অস্থির পরিস্থিতিতে প্রাণহানির ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েই পথে নামেন বিক্ষোভকারীরা ।
পুলিশের ধারণা, বিক্ষোভে প্রায় সাড়ে তিন হাজার লোক অংশ নেন। তবে অন্যরা বলছেন, বিক্ষোভে পুলিশের অনুমানের চেয়ে দ্বিগুণ লোক অংশ নেন। বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তের পদত্যাগসহ দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানান।
বেশ কিছু সড়কে বিক্ষোভকারীরা পাথর ছোড়েন। তাদের মোকাবিলায় সারি সারি পুলিশ অবস্থান নেয়। বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে শহরের একটি ঐতিহাসিক ভবনে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়।
সান মার্টিন প্লাজার ওই ভবনটি ছিল ফাঁকা যখন এতে বড় আগুনের শিখা দেখা যায়। আগুন লাগার কারণ অজানা বলে স্থানীয় একটি রেডিওকে জানান অগ্নিনির্বাপন সংস্থার কমান্ডার।
কানাডা-ভিত্তিক খনি কোম্পানি হুদাবে এক বিবৃতিতে বলেছে, বিক্ষোভকারীরা পেরুতে তাদের সাইটে প্রবেশ করে ক্ষয়ক্ষতি করেছেন। যন্ত্রাদি ও যানবাহনে আগুন দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী আলবার্তো ওতারোলা প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তেসহ অন্য মন্ত্রীদের নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, এটি কোনও বিক্ষোভ নয়। আইনের শাসনের অন্তর্ঘাত।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভিসেন্তে রোমেরো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিমায় পুলিশ কর্মকর্তাদের টিয়ার গ্যাস গ্রেনেডের ফলে আগুন লাগার দাবি অস্বীকার করেছেন।
পেরুর বামপন্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিওকে সরিয়ে দেওয়ার পর ৭ ডিসেম্বর বিক্ষোভ শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার লোকজন বাসে করে, পায়ে হেঁটে রাজধানী লিমায় এসে বিক্ষোভে অংশ নেন। তারা জাতীয় পতাকা ও ব্যানার নিয়ে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আয়াকুচু ও জুলিয়াকায় সংঘর্ষের প্রতিবাদ জানান। রাজধানীর বাইরে অন্যান্য শহরেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।