আগরতলা, ৭ জানুয়ারি : ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচনে গ্রেটার তিপরাল্যান্ড ইস্যুতে কোন আপোষ নয়। আইপিএফটি-কে পাশে থাকার বার্তা দিয়ে একথা সাফ জানালেন তিপরা মথার সুপ্রিমো তথা এমডিসি প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ। শারীরিক অসুস্থতা কাটিয়ে দীর্ঘদিন বাদে আজ সন্ধ্যায় ফেইসবুক লাইভে এসে নাম না করেই শাসক দল বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র বিষোদ্গার করলেন তিনি। তবে, কংগ্রেস এবং বামেদের সাথে জোটে যাওয়ার দরজা বনধ রেখেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াইয়ের বার্তা দিলেন তিনি।
এদিন তিনি চার বছর আগে ৮ জানুয়ারি মাধববাড়িতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় আন্দোলনে গুলি চালানোর ঘটনার স্মৃতি উস্কে দিয়েছেন। শাসক দল বিজেপি এবং ত্রিপুরা সরকারকে নিশানা করে তিনি বলেন, কোন রাজনৈতিক দল নয়, সেদিন তিপ্রাসাদের উপর হামলা হয়েছিল। তাই, আগামীকাল ৮ জানুয়ারি ওই ঘটনার প্রতিবাদে কালো দিবস পালনের ডাক দিয়েছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ওই ঘটনায় একজনও পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে সরকার আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি।
তিনি বলেন, প্রতি নির্বাচনে জাতীয় দলের কেন্দ্রীয় নেতারা মানুষকে কৌশলে বোকা বানানোর কাজ সুচারুভাবে করে থাকেন। নির্বাচনী পর্ব সমাপ্ত হতেই তাঁরা রাজ্য ছেড়ে চলে যান। তাতে, আখেরে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাঁর সাফ কথা, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে গ্রেটার তিপরাল্যান্ডের প্রশ্নে কোন আপোষ নয়। অন্তিম লড়াই আগামী প্রজন্ম, ত্রিপুরার মাটি এবং মানুষের জন্য লড়ব।
কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে এদিন প্রদ্যোতের দাবি, কতদিন বাঁচব তা জানি না। তবে, ক্ষমতার জন্য নয়। মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং মানুষকে ক্ষমতায় বসাতে ইতিবাচক লড়াই চাইছি। তাঁর আবেদন, ঘৃণা ছড়িয়ে নয়, সুস্থ মানসিকতার পরিচয় দিয়ে হোক লড়াই। তিনি ডাক দেন, তিপ্রাসাদের এক হতে হবে। তাঁর ঐক্যের ডাকে সাড়া দিয়ে আইপিএফটি পাশে থাকুক চাইছেন তিনি। কারণ, শ্লোগান যখন এক, নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মার অবর্তমানে আইপিএফটি বিধানসভা নির্বাচনে তিপরা মথা সাথে ঐক্যবদ্ধ হোক, কাতর আবেদন রাখেন তিনি।
তাঁর কথায়, নাম যা খুশি হোক, কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে একই চিহ্নে ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে চাইছি। এক্ষেত্রে আইপিএফটি-কে দুই দলের একত্রিত নাম স্থির করার দায়িত্ব দিতে চাইছেন তিনি।
তাত্পর্যপূর্ণভাবে, আজ তিনি কংগ্রেস এবং বামেদের সাথে জোটের প্রশ্নে দূরত্ব রেখেছেন। শাসকদল বিজেপি-কে নাম না করে বারে বারেই তিনি নিশানা করেছেন। ফলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বিধানসভা নির্বাচনে জনজাতি ভাবাবেগই হবে প্রদ্যোতের তুরুপের তাস। সেই লক্ষ্যেই বছরের প্রথমে নির্বাচনী হওয়া বইতে শুরু হতেই তিনি আইপিএফটি-কে কাছে টানার খোলা বার্তা দিয়েছেন।

